Share on WhatsApp Share on Telegram

দলগত নির্দেশনা কাকে বলে | দলগত নির্দেশনার সুবিধা ও অসুবিধা | Group Guidance

Join Our Channels

বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনার মধ্যে দলগত নির্দেশনা একটি অন্যতম নির্দেশনা প্রক্রিয়া। দলগত নির্দেশনা (Group Guidance) -র ক্ষেত্রে অধিক সংখ্যক ব্যক্তি বা শিক্ষার্থী উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

ব্যক্তিগত নির্দেশনার বিপরীত হল দলগত নির্দেশনা। এই প্রকার নির্দেশনা দলগতভাবে সম্পন্ন হয়ে থাকে। অর্থাৎ যখন একইসঙ্গে অধিক সংখ্যক মানুষকে নির্দেশনার প্রয়োজন হয় তখন দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়া ব্যবহৃত হয়। এখানে দলগত নির্দেশনা কাকে বলে? দলগত নির্দেশনার সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করা হল।

দলগত নির্দেশনা কাকে বলে | Group Guidance

যে নির্দেশনা দলগতভাবে সম্পন্ন হয়ে থাকে তাকে দলগত নির্দেশনা বলা হয়। তাই যে নির্দেশনায় দুই বা ততোধিক ব্যক্তিকে একত্রে দলগতভাবে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ এর মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা হয়, তখন তাকে দলগত নির্দেশনা বলে।

ব্যক্তিগত নির্দেশনায় যেখানে এককভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে দলগত নির্দেশনায় একাধিক ব্যক্তিবার শিক্ষার্থীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

দলগত নির্দেশনার সংজ্ঞা

দলগত নির্দেশনার অন্যতম সংজ্ঞা হল –

মনোবিদ জোন্স (Joones) বলেছেন – দলগত নির্দেশনা হল একটি দলগত কার্যকলাপ, যার প্রাথমিক উদ্দেশ্য দলের অন্তর্গত প্রতিটি ব্যক্তির সমস্যা সমাধান এবং তাদেরকে যথাযথ সঙ্গতি-বিধানে সাহায্য করা।

তাই যে নির্দেশনা ব্যক্তিগতভাবে নয় বরং দলগতভাবে সম্পন্ন হয় ও দলগতভাবে সমস্যার সমাধান করা হয় তাকে দলগত নির্দেশনা বলে। দলগতভাবে উদ্দীপনা বা উৎসাহ প্রদান করা এই নির্দেশনা অন্যতম লক্ষ্য।

দলগত নির্দেশনা দলের সদস্যদের মধ্যে একটি সুসম্পর্ক বজায় থাকে। তাই এই ধরনের নির্দেশনায় বহুমুখী সংযোগ ব্যবস্থা পরিলক্ষিত হয়। অন্যান্য নির্দেশনা দান প্রক্রিয়ার তুলনায় দলগত নির্দেশনা অপেক্ষাকৃত কম সময়ের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা সম্ভবপর হয়।

দলগত নির্দেশনার স্তর

দলগত নির্দেশনা কয়েকটি স্তর পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল –

  • দলের সমস্যা নির্ণয় করা
  • সমস্যার বিশ্লেষণ করা
  • যথাযথভাবে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা
  • দলের সদস্যদের উৎসাহ দান
  • সর্বোচ্চ লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য সচেষ্ট হওয়া।

দলগত নির্দেশনার সুবিধা ও অসুবিধা

দলগত নির্দেশনার সুবিধা ও অসুবিধা যে সমস্ত দিক থেকে পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি নিম্ন আলোচনা করা হল –

দলগত নির্দেশনার সুবিধা

দলগত নির্দেশনার সুবিধা বহুবিধ। যে সমস্ত দিক থেকে দলগত নির্দেশনার সুবিধা বর্তমান, সেগুলি হল –

1. দলগত নির্দেশনার ক্ষেত্রে সময় ও অর্থের অপচয় হয় না। অর্থাৎ এই নির্দেশনায় সময় ও অর্থের সাশ্রয় হয়।

2. দ্রুত যে-কোনো সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে দলগত নির্দেশনা অধিক কার্যকরী।

3. চিকিৎসা ক্ষেত্রে দলগত নির্দেশনা ব্যবহারের প্রচলন দেখা দেয়।

4. দলগত নির্দেশনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আচরণ ধারার পরিবর্তন এবং দৃষ্টিভঙ্গির উন্নতিকরন করতে সহজ হয়।

5. দলগত নির্দেশনায় শিক্ষার্থীদের সমস্যার উপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়ার সুযোগ থাকে।

6. অপর ব্যক্তির সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ থাকে বলে দলগত নির্দেশনা দলীয় গতিশীলতা এবং ঐক্য স্থাপনের সুবিধা হয়।

আরোও পোস্ট পড়ুন – Click Here Now

দলগত নির্দেশনার অসুবিধা

দলগত নির্দেশনার অসুবিধা যে সমস্ত দিক থেকে পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল –

1. এই নির্দেশনায় দায়িত্ব বন্টনে অসুবিধা পরিলক্ষিত হয়।

2. ব্যক্তিগত সমস্যার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয় না। এর ফলে ব্যক্তির নিজস্ব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব করা হয় না।

3. প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের অভাবে বা পর্যবেক্ষকের অভাবে এই নির্দেশনা অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের সফলতা এনে দিতে ব্যর্থ হয়।

4. দলগত নির্দেশনার ক্ষেত্রে সুপরিকল্পনার অভাব পরিলক্ষিত হয়। অর্থাৎ এটিতে সুপরিকল্পনা পরিলক্ষিত হয় না।

5. দলগত নির্দেশনার ক্ষেত্রে অধিক পরিশ্রম লাগে।

6. অন্তর্মুখী ব্যক্তিদের বা যারা কানে শুনতে পায় না বা প্রতিবন্ধী শিশুদের দলগত নির্দেশনা দেওয়া সম্ভব হয় না।

7. এই নির্দেশনায় সকলের নির্দেশনা যথাযথ ও প্রাসঙ্গিক হয় না।

8. অনেক ক্ষেত্রে এই নির্দেশনায় যুক্ত ব্যক্তিবর্গ তাদের নিজেদের সমস্যা, মনোভাব প্রভৃতি দলের মধ্যে প্রকাশ করে না। তাই এক্ষেত্রে দলগত নির্দেশনা প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে বিশেষ অসুবিধা পরিলক্ষিত হয়।

উপসংহার (Conclusion)

পরিশেষে বলা যায়, বিভিন্ন নির্দেশনার মধ্যে দলগত নির্দেশনা একটি বিশেষ উপযোগী পদ্ধতি। কারণ এই নির্দেশনার মাধ্যমে সহজে ও কম সময় বহু জন শিক্ষার্থী বা ব্যক্তিকে নির্দেশনা দান করা সম্ভব করা। ফলে একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই সঙ্গে বিভিন্ন ব্যক্তি উপকৃত হয়। তাই আধুনিক শিক্ষা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দলগত নির্দেশনার প্রয়োগ অধিক বেশি পরিলক্ষিত হয়।

তথ্যসূত্র (Reference)

  • Basu, N.C. Educational and Vocational Guidance.
  • Chauhan, S.S. – Principles and Techniques of Guidance.
  • Dave Indu – The Basic Essentials of Counseling.
  • Kocher, S.K. – Guidance and Counselling in Secondary School
  • NCERT- Guidance and Counseling.

প্রশ্ন – দলগত নির্দেশনা বলতে কি বোঝ?

উত্তর – যে নির্দেশনা দান প্রক্রিয়া একাধিক ব্যক্তির সমস্যার সমাধানের জন্য করা হয়ে থাকে তাকে দলগত নির্দেশনা বলে। এই প্রকার নির্দেশনায় বহুমুখী সংযোগ প্রক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়।

প্রশ্ন – দলগত নির্দেশনা ‘ শব্দটি সর্ব প্রথম কে ব্যবহার করেন

উত্তর – দলগত নির্দেশনা ‘ শব্দটি সর্ব প্রথম ব্যবহার করেন বিশিষ্ট মনোবিদ ও বুদ্ধির অভিক্ষার প্রবক্তা বিঁনে (Binet)।

আরোও পড়ুন

3.3/5 - (3 votes)

Mr. Debkumar – Author and Founder of Edutiips.com

Mr. Debkumar – Author and Founder of Edutiips.com

A dedicated educator with 10+ years of teaching experience, UGC NET Qualified, and holder of MA, B.Ed, and M.Phil in Education (University of Calcutta).

He has authored several books published by Aheli Publication, such as Communication Skills, Aspect of Democratic Citizenship, Sociological Foundation of Education, Computer Applications, Fundamentals of Education, Educational Organization and Planning, and Educational Research.

He is also an active contributor on Quora, where he shares expert insights on education, history, and social issues.

Leave a Comment

close