Share on WhatsApp Share on Telegram

সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অপ্রথাগত সংস্থার ভূমিকা | Informal Agencies in Social Communication

Join Our Channels

সামাজিক যোগাযোগ হল সমাজের মানুষের সঙ্গে ভাবের আদান প্রদান করা। সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অপ্রথাগত সংস্থার ভূমিকা (Informal Agencies in Social Communication) বিভিন্ন দিক থেকে লক্ষ্য করা যায়।

সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অপপ্রথাগত সংস্থার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন অপ্রথাগত সংস্থা সমাজের মানুষের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে থাকে। যার মাধ্যমে ব্যক্তির সাথে ব্যক্তির পারস্পরিক সম্পর্ক, সামাজিক সম্পর্ক স্থাপন, ভাবের আদান প্রদান প্রভৃতি সংঘটিত হয়ে থাকে।

সামাজিক যোগাযোগ কাকে বলে

সামাজিক যোগাযোগ হল সমাজে বিভিন্ন মানুষের মেলবন্ধন ও ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে সামাজিক চাহিদা পূরণ। এই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে শিশু সামাজিকীকরণে সক্ষম হয়।

তাই সামাজিক যোগাযোগ বলতে মৌখিক এবং অমৌখিক দক্ষতা, সামাজিক মিথস্ক্রিয়া এবং সামাজিক জ্ঞানের উদ্ভবকে বোঝায়।

সুতরাং সামাজিক যোগাযোগ বলতে এমন ভাষা মাধ্যমকে বোঝায় যা সামাজিক পরিস্থিতিতে ব্যবহৃত হয় (Refers to language that is used in social situations)।

সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অপ্রথাগত সংস্থার ভূমিকা | Informal Agencies in Social Communication

সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অপ্রথাগত সংস্থার অন্যতম উদাহরন হল – পরিবার (Family)।

তাছাড়া অপপ্রথাগত সংস্থার ক্ষেত্রে বেতার বা রেডিও (Radio), দূরদর্শন (Television), সংবাদপত্র (Newspaper) প্রভৃতি গণমাধ্যম হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।

সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অপ্রথাগত সংস্থার ভূমিকা বা সামাজিক যোগাযোগের অনানুষ্ঠানিক সংস্থার ভূমিকা (Informal Agencies in Social Communication) নিম্নে আলোচনা করা হল –

সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা

সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অপ্রথাগত সংস্থার ভূমিকা হিসেবে পরিবারের ভূমিকা অগ্রগণ্য। কারণ পরিবার অপ্রথাগত সংস্থা একটি অন্যতম সংস্থা। যেটি শিশুকে তার জন্ম মুহূর্ত থেকে লালন পালনের মাধ্যমে বড় করে তোলে।

সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অপ্রথাগত সংস্থার ভূমিকা হিসেবে পরিবারের ভূমিকা যে সমস্ত দিক থেকে পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল নিম্নলিখিত –

ভাষার বিকাশ সাধন

সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে পরিবার শিশুর ভাষার বিকাশে সহায়তা করে থাকে। কারণ সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভাষা একটি অন্যতম উপাদান হিসেবে গণ্য হয়। ভাষার মাধ্যমে সমাজে ব্যক্তিবর্গের মধ্যে পারস্পরিক ভাবের আদান-প্রদান সংঘটিত হয়। তাই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে পরিবার শিশুর ভাষা বিকাশের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগের উপযুক্ত করে গড়ে তোলে।

সামাজিকীকরণে সাহায্য

সামাজিকীকরণ হল সমাজের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া বা সমাজের উপযুক্ত করে গড়ে তোলা। এক্ষেত্রে পরিবার বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ পরিবার শিশুর সামাজিকীকরণের প্রধান অপ্রথাগত সংস্থা।

তাই শিশুর জন্ম মুহূর্ত থেকে শুরু করে পরিণত হওয়া পর্যন্ত বা সারা জীবন পরিবার শিশুকে সমাজ উপযোগী করে গড়ে তোলে। যেটি শিশুকে সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সু-অভ্যাস গঠন

পরিবার শিশুকে বিভিন্ন সুঅভ্যাস (যেমন সত্য কথা বলা, সকালে ঘুম থেকে ওঠা) গঠন করে। ফলে শিশু সামাজিক পরিবেশের সঙ্গে বা সামাজিক যোগাযোগে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং সমাজে পরিচিতি লাভ করে। তাই সামাজিক যোগাযোগের অনিয়ন্ত্রিত সংস্থা বা অপ্রথাগত সংস্থা হিসেবে পরিবার বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

প্রাথমিক শিক্ষা প্রদান

পরিবার শিশুকে প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগের অপ্রতাগত সংস্থা হিসেবে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এর ফলে শিশু বৃহত্তর সমাজের মধ্যে সহজে মানিয়ে নিতে পারে বা সামাজিক যোগাযোগে অংশগ্রহণ করতে পারে।

সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে রেডিওর ভূমিকা

সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অপ্রথাগত সংস্থার ভূমিকা হিসেবে রেডিও অন্যতম এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সামাজিক যোগাযোগের অপ্রথাগত সংস্থাগুলির মধ্যে রেডিও প্রাচীনতম এবং গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা বা গণমাধ্যম। সামাজিক যোগাযোগের এটি একটি শ্রুতিনির্ভর যোগাযোগ মাধ্যম। যেটি ব্যক্তিকে সামাজিক যোগাযোগে বিশেষভাবে সহায়তা করে।

সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অপ্রথাগত সংস্থা হিসেবে রেডিওর ভূমিকা গুলি হল নিম্নলিখিত –

জনসংযোগ সাধন

সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে রেডিও কেবলমাত্র তথ্য সম্প্রচার করে না। এটি জনসংযোগ সাধনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যা সামাজিক যোগাযোগে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের সহায়তা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে বা সংস্থা হিসাবে বা গণমাধ্যম হিসেবে রেডিও দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের সহায়তা করে। দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা রেডিওর বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচারের মাধ্যমে সাহায্য পেয়ে থাকে। তাই এটি সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে সাহায্য করে।

আগাম বার্তা প্রদান

রেডিওর মাধ্যমে বিভিন্ন খবরা খবর বা আগাম বার্তা দেওয়া সম্ভব হয়। যেমন আবহাওয়া সম্পর্কিত বার্তা বা সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। ফলে যারা সমুদ্রে মাছ ধরতে যায় তারা আবহাওয়া সম্পর্কে ওয়াকিবহল হতে পারে এবং সরকারি বিভিন্ন জনস্বার্থ মূলক বার্তা জনগণকে বিশেষভাবে সহায়তা করে। যা তাদের সামাজিক যোগাযোগের অংশগ্রহণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

সামাজিক মেলবন্ধন স্থাপন

রেডিও সামাজিক মেলবন্ধন স্থাপন করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। অর্থাৎ রেডিও বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে থাকে। এর মাধ্যমে একসঙ্গে সমাজের বহু মানুষের মধ্যে সংযোগ স্থাপন সম্ভবপর হয়। তাই রেডিওর মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগকে প্রশস্ত করে তোলে।

উপসংহার (Conclusion)

পরিশেষে বলা যায়, সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অপ্রথাগত সংস্থা ভূমিকা হিসেবে পরিবার ও রেডিও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই দুটি সংস্থা ব্যক্তিকে সহজে সামাজিক যোগাযোগে অংশগ্রহণ করতে সহায়তা করে, এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

প্রাথমিক গোষ্ঠীর ধারণা, সংজ্ঞা, বৈশিষ্ঠ্য ও শিক্ষাগত তাৎপর্যসামাজিক গোষ্ঠীর ধারণা, সংজ্ঞা ও শ্রেণীবিভাগ
শিশুর সামাজিকীকরণে পরিবারের ভূমিকাশিশুর সামাজিকীকরণে বিদ্যালয়ের ভূমিকা

তথ্যসূত্র (Reference)

  • Brown, F. J. (1954). Educational Sociology. New York: Prentice-Hall.
  • Bhattacharjee, Srinivas. (1996). Philosophical & Sociological Foundation of Education. Herald book service.
  • Das, P. (2007). Sociological Foundation of Education. New Delhi: Authorspress
  • Shukla, S & K Kumar. (1985). Sociological Perspective in Education. New Delhi, Chanakya
    Publications
  • Sodhi, T.S & Suri, Aruna. (1998). Philosophical & Sociological Foundations of Education, H.P Bhargav Book House, Agra,

প্রশ্ন – পরিবার কি ধরনের শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান

উত্তর – পরিবার হল অপ্রথাগত শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান।

প্রশ্ন – সামাজিক যোগাযোগের দুটি অপ্রথাগত সংস্থা কি কি

উত্তর – সামাজিক যোগাযোগের দুটি অপ্রথাগত সংস্থা হল পরিবার এবং গণমাধ্যম হিসেবে সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম অপ্রথাগত সংস্থা হল রেডিও বা বেতার।

প্রশ্ন – সামাজিক যোগাযোগের অপ্রথাগত সংস্থা কাকে বলে

উত্তর – যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোন নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন বা বিধি-নিষেধ থাকে না, তাকে সামাজিক যোগাযোগের অপপ্রথাগত সংস্থা বলে। যেমন – পরিবার, রেডিও, সংবাদপত্র প্রভৃতি

আরোও পড়ুন

Rate this post

Author Photo

Mr. Debkumar – Founder of Edutiips.com

A teacher and author of several books published by Aheli Publication, including Communication Skills, Aspect of Democratic Citizenship, Sociological Foundation of Education, Computer Applications, Fundamentals of Education, Educational Organization and Planning, and Educational Research.

1 thought on “সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অপ্রথাগত সংস্থার ভূমিকা | Informal Agencies in Social Communication”

Leave a Comment

close