সমাজতত্ত্ব ও ইতিহাসের সম্পর্ক | Relationship Between Sociology and History

সমাজতত্ত্ব ও ইতিহাস দুটি আলাদা বিষয়। কিন্তু সামাজিক বিজ্ঞান হিসেবে সমাজতত্ত্ব ও ইতিহাসের সম্পর্ক (Relationship Between Sociology and History) খুবই ঘনিষ্ঠ প্রকৃতির পরিলক্ষিত হয়।

সমাজতত্ত্ব ও ইতিহাসের সম্পর্ক | Relationship Between Sociology and History

সমাজতত্ত্ব ও ইতিহাস উভয় বিষয় সামাজিক বিজ্ঞানের অন্তর্গত বিষয়। সামাজিক বিজ্ঞান হিসেবে তাই সমাজতত্ত্ব ও ইতিহাসের সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ প্রকৃতির। উভয় বিষয়ের মূল বিষয়বস্তু মানুষের সমাজ এবং উভয়ের বিভিন্ন আলোচ্য বিষয় সামাজিক প্রেক্ষাপটে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনাসমূহ।

তবে সমাজতত্ত্ব ও ইতিহাসের মধ্যে যেমন সম্পর্ক বা সাদৃশ্য রয়েছে তেমনি বৈসাদৃশ্য রয়েছে। তাই সমাজতত্ত্বের সঙ্গে ইতিহাসের এই অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক আলোচনা করতে গিয়ে অনেক সমাজতাত্ত্বিক সমাজতত্ত্বের স্বাতন্ত্রকেই অস্বীকার করেছেন।

সমাজতত্ত্ব এবং ইতিহাসের মধ্যে যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান, সে সম্পর্কে আলোকপাত করা হল –

i) অতীতে সমাজ জীবনে সংঘটিত হওয়া বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে ইতিহাস সমাজতত্ত্বকে বিশেষভাবে সাহায্য করে। অর্থাৎ ইতিহাসের মধ্যে সামাজিক বিভিন্ন ঘটনাবলী নিহিত থাকে। যেমন – ছিয়াত্তরের মন্বন্তর, বিদ্যাসাগরের সমাজ সংস্কার, রামমোহন রায়ের সমাজ সংস্কার প্রভৃতি।

আবার ইতিহাসের বিষয়বস্তুকে যথাযথভাবে বর্ণ্না দেয়ার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিকগণ সমাজতত্ত্বের মৌলিক ধারণা গুলি সম্পর্কে অবগত হয়। সমাজবিদ্যা ও ইতিহাস মানুষের অতীত ঘটনাবলী সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের সাহায্য করে। তাই দুটি বিষয় একে অপরের সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পর্কযুক্ত।

ii) সমাজতত্ত্বের মাধ্যমে ঐতিহাসিক ঘটনাবলীকে সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিশ্লেষণ করে থাকে। তাই ঐতিহাসিকগণ যে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করেন তার ভিত্তিতেই সমাজতত্ত্বের চর্চার এই বিশেষ ধারাটি গড়ে উঠেছে। বিশিষ্ট সমাজবিদ ম্যাক্স ওয়েবার (MaxWeber) ধনতান্ত্রিক কাঠামোর সূত্রপাত ও ক্রমবিকা সম্বন্ধে যে আলোচনা করেছিলেন সেটি ঐতিহাসিক সমাজতত্ত্বের পর্যায় ভুক্ত। এক্ষেত্রে ইতিহাস ও সমাজতত্ত্বের মধ্যে সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয়।

উপসংহার (Conclusion)

পরিশেষে বলা যায়, সমাজতত্ত্ব ও ইতিহাস উভয় বিষয় বিষয়গত বা পটভূমি গত দিক থেকে অভিন্ন সম্পর্কে আবদ্ধ। ঐতিহাসিকগণ ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে সমাজ বিজ্ঞানের গবেষণার ফলাফল যেমন গ্রহণ করেন তেমনি সমাজতত্ত্বের বিভিন্ন বিষয় ইতিহাসকে আশ্রয় করে গড়ে ওঠে।

তথ্যসূত্র (Reference)

  • Brown, F. J. (1954). Educational Sociology. New York: Prentice-Hall.
  • Bhattacharjee, Srinivas. (1996). Philosophical & Sociological Foundation of Education. Herald book service.
  • Das, P. (2007). Sociological Foundation of Education. New Delhi: Authorspress
  • Shukla, S & K Kumar. (1985). Sociological Perspective in Education. New Delhi, Chanakya
    Publications
  • Sodhi, T.S & Suri, Aruna. (1998). Philosophical & Sociological Foundations of Education, H.P Bhargav Book House, Agra,
  • Relationship Between Sociology and History

প্রশ্ন – ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞানের সম্পর্ক?

উত্তর – ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞানের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আবদ্ধ। সামাজিক বিজ্ঞানী হিসেবে উভয় বিষয়ে একে অপরের পরিপূরক হিসেবে গণ্য করা হয়। উভয় বিষয়ের পটভূমি বা বিষয়বস্তু মানুষের সমাজ এবং উভয়ের অভিন্ন আলোচ্য বিষয় সামাজিক প্রেক্ষাপটে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা।

আরোও পড়ুন

Leave a Comment

close