Share on WhatsApp Share on Telegram

১৮১৩ সালের সনদ আইনের শিক্ষামূলক গুরুত্ব | Educational Importance of the Charter Act of 1813

Join Our Channels

ব্রিটিশ শাসন যুগে ভারতবর্ষে মিশনারীরা এবং ব্রিটিশরা শিক্ষার জন্য বিভিন্ন নীতি নির্ধারণ করেন। এদের মধ্যে অন্যতম হল ১৮১৩ সালের চার্টার অ্যাক্ট বা সনদ আইন (Charter Act of 1813)।

সনদ আইন বা চার্টার অ্যাক্ট শিক্ষা ক্ষেত্রে (Charter Act of 1813 and Its Educational Impact in British India) বিশেষ প্রভাব ফেলেছিল। অর্থাৎ এই সনদ আইনের মাধ্যমে ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন হবে তার সুপারিশ করা হয়েছিল।

সনদ আইন বা চার্টার অ্যাক্ট কি |Charter Act 1813

সনদ আইন বা চার্টার অ্যাক্ট (Charter Act 1813) হল ভারতবর্ষের শিক্ষা ক্ষেত্রে বিভিন্ন নীতি নির্ধারণ করা। ১৮১৩ সালের সনদ আইন পার্লামেন্টে নবীকরণের সময় দুটি সমস্যা দেখা দেয়। এ দুটি হল –

i) মিশনারিদের প্রতি রাষ্ট্রের মনোভাব এবং

ii) শিক্ষা ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকা

মিশনারিদের প্রতি রাষ্ট্রের মনোভাব বা মিশনারিদের শিক্ষা প্রসারে বা ভারতবর্ষের অবাধ প্রবেশের ক্ষেত্রে ১৮১৩ সালের সনদ আইনে কোনো বিধি-নিষেধ ছিল না। কিন্তু শিক্ষাক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকা প্রসঙ্গে পার্লামেন্টের প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য এই দুটি দল সৃষ্টি হয়।

বিশেষ করে ১৮১৩ সালের সনদ আইনের 43 নম্বর ধারার ব্যাখ্যা নিয়ে। 43 নম্বর ধারায় বলা হয়েছে শিক্ষার বিস্তারে প্রতিবছর রাজস্ব থেকে এক লক্ষ টাকা ব্যয় হবে।

কিন্তু শিক্ষা ক্ষেত্রে কিভাবে এই ব্রিটিশ সরকার ১ লক্ষ টাকা ব্যয় করবে তা পরিষ্কার করে বলা হয়নি। তাই প্রাচ্যবাদীরা ভারতীয় শিক্ষার প্রতি এবং পাশ্চাত্যবাদীরা ইংরাজী শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে। এইভাবে 43 নম্বর ধারার ব্যাখ্যা নিয়ে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।।

পরবর্তীকালে মেকলে মিনিটের মাধ্যমে এটি সমাধানের চেষ্টাও করা হয়।

সনদ আইনের শিক্ষামূলক গুরুত্ব | Educational Impact of the Charter Act 1813

১৮১৩ সালের সনদ আইনের শিক্ষামূলক গুরুত্ব বিভিন্ন দিক থেকে পরিলক্ষিত হয়। সেগুলি হল নিম্নলিখিত –

1. চার্লস গ্রান্ড এর আন্দোলন সফলতা লাভ | Success of Charles Grant’s Educational Movement

সনদ আইনের নবী করনের ফলে চার্লস গ্রান্ড এর আন্দোলন আংশিকভাবে সফল হয়। এবং পাশাপাশি সরকারি উদ্যোম স্বীকৃত হয়।

2. ধর্মনিরপেক্ষতার শিক্ষা | Introduction of Secular Education in Colonial India

মিশনারিদের কাজের সুযোগ বৃদ্ধি পেলেও খ্রিস্ট ধর্মীয় শিক্ষার আধিপত্য বিস্তারে বিভিন্ন নিয়ম কানুন যুক্ত হল। অর্থাৎ এই শিক্ষাকে একমাত্র শিক্ষা বলে ঘোষণা করা হলো না।

ফলে ভারতবর্ষে এর মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষতা শিক্ষার (secular education in British India) প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়। যা শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

3. বেসরকারি শিক্ষার উদ্যোগের স্বীকৃতি | Recognition of Private Educational Initiatives

১৮১৩ সালের সনদ আইনের শিক্ষামূলক গুরুত্ব হল শিক্ষাক্ষেত্রে মিশনারিদের সুযোগ দেওয়ায় তা পরোক্ষভাবে বেসরকারি ভাবে শিক্ষার উদ্যোগকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ ভারতবর্ষের শিক্ষায় পরিলক্ষিত হয়।

4. সাহিত্য ও শিক্ষার পুনরুজ্জীবন | Revival of Literature and Knowledge Through Education

সনদ আইনে সাহিত্য ও শিক্ষার পুনরুজ্জীবন এবং উন্নয়ন, দেশীয় পণ্ডিতদের উৎসাহদান এবং বৈজ্ঞানিক জ্ঞান প্রভৃতির কথা বলা হয়। যা শিক্ষা ক্ষেত্রে অধিক গুরুত্বপূর্ণ।

এগুলি ছাড়াও সনদ আইনের শিক্ষামূলক গুরুত্ব আরোও যে সমস্ত দিক থেকে পরিলক্ষিত হয় তা হল –

i) এই সনদ আইনের মাধ্যমে ৪৩ নম্বর ধারার প্রয়োগের জন্য কোম্পানি একটি নিজস্ব সংস্থা স্থাপন করতে পারবে।

ii) শিক্ষার বিষয়বস্তু, শিক্ষার লক্ষ্য, শিক্ষার মাধ্যম প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে চার্টার অ্যাক্টে বা সনদ আইনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যেটি শিক্ষাগত গুরুত্বকে প্রভাবিত করে।

আরোও পোস্ট পড়ুন – Click Here Now

উপসংহার (Conclusion)

সর্বোপরি বলা যায়, ১৮১৩ সালের সনদ আইন (Charter Act of 1813) একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দলিল। কিন্তু এই দলিলে বিতর্কিত ৪৩ নম্বর ধারার ব্যাখ্যা নিয়ে বিতর্ক চলেছিল ১৮১৩ সাল থেকে ১৮৩৫ সাল পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত ১৮৩৫ সালে ব্রিটিশ সরকার পরিষ্কার ভাবে ইংরেজি শিক্ষার বিস্তারের মাধ্যমে পাশ্চাত্য শিক্ষা নীতি গ্রহণ করেন।

তথ্যসূত্র (References)

  • Education in India-Past-Present-Future, Vol. I and II, J. P. Banerjee
  • Landmarks in the History of Modern Indian Education, J. C. Aggarwal
  • History of Education in India, Dr. R N Sharma and R K Sharma
  • Report of Commissions – Radhakrishnan, Mudaliar, Kothari.
  • National Policy on Education, 1986. Policy perspective.
  • Internet Sources

প্রশ্ন – সনদ আইন কবে পাস হয়

উত্তর – সনদ আইন পাস হয় ১৮১৩ সালে।

প্রশ্ন – ১৮১৩ সালের সনদ আইনের দুটি গুরুত্ব

উত্তর – ১৮১৩ সালের সনদ আইনের দুটি গুরুত্ব হল –
i) খ্রিস্ট ধর্মীয় শিক্ষার আধিপত্য বিস্তারে বিভিন্ন নিয়ম কানুন যুক্ত হল। অর্থাৎ এই শিক্ষাকে একমাত্র শিক্ষা বলে ঘোষণা করা হলো না। ফলে ভারতবর্ষে এর মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষতা শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়। যা শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
ii) বেসরকারি ভাবে শিক্ষার উদ্যোগকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ ভারতবর্ষের শিক্ষায় পরিলক্ষিত হয়।

আরোও পড়ুন

2/5 - (9 votes)

Mr. Debkumar – Author and Founder of Edutiips.com

Mr. Debkumar – Author and Founder of Edutiips.com

A dedicated educator with 10+ years of teaching experience

He is also an active contributor on Quora, where he shares expert insights on education and social issues.

Leave a Comment

close