শিখনের স্তর গুলি কি কি | Main Stages of Learning

শিখন হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সৃষ্টি হয়। এই শিখনের স্তর (Stages of Learning) কয়েকটি দিক থেকে পরিলক্ষিত হয়। যেটি ব্যক্তিকে উপযুক্ত শিখনে বিশেষভাবে সাহায্য করে।

শিখনের মাধ্যমে ব্যক্তি ধারাবাহিকভাবে অভিজ্ঞতা অর্জন করে থাকে। শিখন প্রক্রিয়া কিভাবে সম্পন্ন হয় তা বিভিন্ন মনোবিদগণ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করেছে। মনোবিদগণ শিখনের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা অর্জন, অনুশীলন, সংরক্ষণ প্রকৃতির উপর গুরুত্ব আরোপ করে থাকেন।

শিখন কি

শিখন হল সক্রিয়তা, অনুশীলন এবং অভিজ্ঞতার ফলে ব্যক্তি বা শিক্ষার্থীর আচরণ ধারার পরিবর্তন। বিভিন্ন মনোবিদগণ শিখনকে বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করেছেন, তা হল –

1. বিশিষ্ট মনোবিদ হিলগার্ড (Hilgard) বলেছেন – শিখন হল বারবার অনুশীলনের ফলে ব্যক্তির বা প্রাণীর আচরণের পরিবর্তন।

2. আবার বিশিষ্ট মনোবিদ স্মিথ (Smith) বলেছেন – শিখন হল নতুন আচরণ বা অভিজ্ঞতা অর্জনের ফলে পুরনো আচরণের শিথিলকরন।

শিখনের স্তর | Stages of Learning

বিভিন্ন মনোবিদদের বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে শিখনের স্তর বা পর্যায়ে গুলিকে তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। সেগুলি নিম্নে ব্যাখ্যা সহ আলোচনা করা হল –

  • অভিজ্ঞতা অর্জন
  • সংরক্ষণ বা ধারণ ও
  • পুনরুদ্রেক

1. অভিজ্ঞতা অর্জন

শিখনের স্তর হিসেবে অভিজ্ঞতা অর্জন হল প্রথম এবং অন্যতম স্তর। কারণ কোনো কিছু শিখতে গেলে অভিজ্ঞতা অর্জন বিশেষভাবে দরকার। এই অভিজ্ঞতা অর্জন আবার স্মৃতি প্রক্রিয়া প্রথম স্তর হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।

2. সংরক্ষণ

শিখনের দ্বিতীয় এবং অন্যতম স্তর হল সংরক্ষণ বা ধারণ। অর্থাৎ আমরা যখন কোনো বিষয় সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করি তখন সেটি সংরক্ষণও করি। কারণ সংরক্ষণ ছাড়া শিখন সম্ভব নয়। তাই সংরক্ষণ হল এমন একটি মানসিক প্রক্রিয়া যেটি অর্জিত অভিজ্ঞতাকে মনে রাখতে সহায়তা করে।

তাই সংরক্ষণের জন্য দরকার উত্তম শিখন। অর্থাৎ সংরক্ষণ প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে বারবার অনুশীলন বা উত্তম শিখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

3. পুনরুত্থান

যথাযথ শিখন এর ক্ষেত্রে কেবলমাত্র অভিজ্ঞতা অর্জন এবং সংরক্ষণ করলে হবে না। পাশাপাশি পুনরুত্থান বিশেষভাবে দরকার। এটি শিখনের পাশাপাশি স্মৃতির ক্ষেত্রেও অধিক প্রযোজ্য।

তাই এখন তখনই স্বার্থক হবে যখন অর্জিত অভিজ্ঞতা সঠিক সময়ে সঠিকভাবে ব্যক্তি বা শিক্ষার্থীরা পুনরুত্থান করতে পারে। এই পুনরুত্থান আবার দুই ধরনের, যথা –

i) পুনরুদ্রেক – যখন অর্জিত অভিজ্ঞতা সঠিক সময়ে মনে করে বলতে পারা যায়, তখন তাকে পুনরুদ্রেক বলে। অর্থাৎ এটির মাধ্যমে পূর্বে অর্জিত কোনো বিষয় বা জ্ঞান মনে করে বলতে পারা। এটি একটি সচেতন প্রক্রিয়া। যার মাধ্যমে ব্যক্তি বা শিক্ষার্থীরা সচেতনভাবে কোনো বিষয় সম্পর্কে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করতে পারে।

ii) প্রত্যাভিজ্ঞা – প্রত্যাভিজ্ঞা হল পূর্বে অর্জিত কোনো বিষয়বস্তুকে চিনে নেওয়া। অর্থাৎ প্রত্যাভিজ্ঞা শিখনের ক্ষেত্রে পুনরুদ্রেকের এমন একটি স্তর যেখানে কোনো ব্যক্তি বা শিক্ষার্থী তার পূর্বের শেখা বিষয়বস্তুকে চিনে নিতে সক্ষম হয়।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় – কোনো অপরাধীকে চোখের সামনে দেখলে সহজে চিনতে পারা। বা পুরনো বন্ধুর নাম মনে করতে না পারলেও তাকে দেখলে চিনতে পারা হল প্রত্যাভিজ্ঞার অন্যতম উদাহরণ।

আরোও পোস্ট পড়ুন – Click Here Now

উপসংহার (Conclusion)

পরিশেষে বলা যায়, শিখন সম্পন্ন হয় কয়েকটি স্তরের প্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। অর্থাৎ শিখনের শুরু হয় অভিজ্ঞতা অর্জন এবং শেষ হয় পুনরুদ্রেক এর মধ্য দিয়ে। তবে শিখনের ক্ষেত্রে অনুশীলনের প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়। কারণ কেবলমাত্র অভিজ্ঞতা অর্জন নয়, তা সংরক্ষণের জন্য বারবার অনুশীলন বিশেষভাবে দরকার। যা ব্যক্তির বা শিক্ষার্থীদের উত্তম শিখনের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্যসূত্র (Reference)

  • A. Woolfolk – Educational Psychology – Pearson Education
  • J. W. Santrock – Educational Psychology – Mc Gray Hill
  • J. C. Aggarwal – Essentials of Educational Psychology – Vikas publisher
  • S. K. Mangal – Essentials of Educational Psychology – PHI Ltd.
  • S. K. Mangal – Advanced Educational Psychology – PHI Ltd
  • S. S. Chauhan – Advanced Educational Psychology – Vikas publisher
  • E. B. Hurlock – Child Development – Anmol Publication Pvt. Ltd
  • L. E. Berk – Child Development – PHI Ltd
  • Internet Sources

আরোও পড়ুন

Leave a Comment

close