Share on WhatsApp Share on Telegram

মানসিক স্বাস্থ্য কাকে বলে | বৈশিষ্ট্য ও লক্ষণ | Definition of Mental Health

Join Our Channels

বর্তমানে সামাজিক, পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন কারণে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য (Mental Health) বিঘ্নিত হয়। অর্থাৎ জীবনে চলার পথে বিভিন্ন ঘটনা ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিশেষ পাওয়া বিস্তার করে থাকে।

সাধারণভাবে মানসিক স্বাস্থ্য হল শারীরিক সুস্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক ভাবে সুস্থ সবল থাকে। তাই বলা হয় সুস্থ মন সুস্থ শরীরের পরিচালক। এখানে মানসিক স্বাস্থ্য কাকে বলে, এর বৈশিষ্ট্য ও মানসিক স্বাস্থ্যের লক্ষণ গুলি আলোকপাত করা হলো।

মানসিক স্বাস্থ্য কাকে বলে | Definition of Mental Health

মানসিক স্বাস্থ্য হল পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে করা সুষ্ঠুভাবে অভিযোজন করা। অর্থাৎ পারিপার্শ্বিক পরিবেশের বিভিন্ন চাপ সৃষ্টিকারীর পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা হল মানসিক স্বাস্থ্য। যে সমস্ত ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য যত ভালো তারা পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে সহজে অভিযোজন করতে পারে।

মানসিক স্বাস্থ্যের সংজ্ঞা

বিভিন্ন মনোবিদ্‌ মানসিক স্বাস্থ্যকে বিভিন্ন দিক থেকে সংজ্ঞায়িত করেছেন, সেগুলি হল –

বিশিষ্ট মনোবিদ K. Meninger বলেছেন – মানসিক স্বাস্থ্য কেবলমাত্র উৎকর্ষতার সঙ্গে, সন্তোষজনকভাবে এবং আত্মসন্তুষ্টির সঙ্গে নিয়ম অনুসরণ করাই নয়। বরং এটি সর্বাধিক কার্যকারিতা এবং আনন্দের সঙ্গে পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতি বিধানের প্রক্রিয়া।

WHO definition of mental health – “Mental health is a state of mental well-being that enables people to cope with the stresses of life, realize their abilities, learn well and work well.”

অর্থাৎ মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে WHO -এর সংজ্ঞাতে বলা হয়েছে – মানসিক স্বাস্থ্য হল মানসিক সুস্থতার একটি অবস্থা যা মানুষকে জীবনের চাপ মোকাবেলা করতে, তাদের ক্ষমতা উপলব্ধি করতে, ভালভাবে শিখতে এবং ভালভাবে কাজ করতে সক্ষম করে।

মনোবিদ Hadfield বলেছেন – মানসিক স্বাস্থ্য হল সম্পূর্ণ ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণ ও সামঞ্জস্যপূর্ণ ক্রিয়া-কলাপ।

মানসিক স্বাস্থ্যের বৈশিষ্ট্য

মানসিক স্বাস্থ্যের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের বর্তমান, সেগুলি হল –

i) মানসিক স্বাস্থ্য পরিবর্তনশীল পরিবেশের সাথে পরিবর্তিত হয়। তাই এটি গতিশীল প্রকৃতির।

ii) মানসিক স্বাস্থ্য অভিযোজনমূলক। অর্থাৎ পরিবর্তনশীল পরিবেশ ও সমাজের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষ সুষ্ঠু অভিযোজন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।

iii) ইতিবাচক প্রকৃতির। অর্থাৎ মানসিক স্বাস্থ্য ব্যক্তিকে ইতিবাচক মনোভাব গঠনের সহায়তা করে। কারণ নেতিবাচক মনোভাব ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য বিঘ্নিত করতে পারে।

iv) ব্যক্তিগত প্রকৃতির। মানসিক স্বাস্থ্য সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তিগত প্রকৃতির হয়ে থাকে। অর্থাৎ পরিবর্তনশীল পরিবেশের সাথে ব্যক্তি কিভাবে অভিযোজন করবে সেটা তার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়।

মানসিক স্বাস্থ্যের লক্ষণ

সুস্থ মানসিক সম্পন্ন ব্যক্তি সমাজের সহজে মানিয়ে নিতে পারে। কোনো ব্যক্তির মধ্যে সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যের লক্ষণ বিভিন্ন দিক থেকে পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল –

i) সামাজিকীকরণে অংশগ্রহণ। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো হলে ব্যক্তি সহজে পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে বা সামাজিকীকরণে সহজে অংশগ্রহণ করতে পারে।

ii) সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্য লক্ষণযুক্ত ব্যক্তি বিভিন্ন প্রক্ষোভ থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যেমন – রাগ, ভয়, ক্রোধ প্রভৃতি।

iii) সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তি সহজে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ বা সমস্যার মোকাবিলা করতে পারে। অর্থাৎ বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে অগ্রসর হতে পারে।

iv) সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্য সম্পন্ন ব্যক্তি সহজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অর্থাৎ নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারে। তাই এই সমস্ত ব্যক্তিগণ পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিতে আত্মসচেতন থাকে।

vi) সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যযুক্ত ব্যক্তি অপরের উপর নির্ভরশীল কম করে থাকে।

vii) সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ব্যক্তিরা সহজে পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে বা অভিযোজন করতে পারে।

viii) সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যসম্পন্ন ব্যক্তির লক্ষণ হল মানসিক স্থিতাবস্তা বজায় রাখা। অর্থাৎ মানসিক দিক দিয়ে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে থাকে।

ix) সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তির অন্যতম লক্ষণ হল এরা যে কোনো সিদ্ধান্ত দ্রুত নিতে পারে।তাছাড়া চিন্তাভাবনা উন্নত প্রকৃতির হয়ে থাকে। যার ফলে এই সমস্ত ব্যক্তিরা সৃজনশীল প্রকৃত হয়।

উপসংহার (Conclusion)

পরিশেষে বলা যায়, মানসিক স্বাস্থ্য হলো ব্যক্তির আবেগ, চিন্তাভাবনা, মনোভাব প্রভৃতির সংমিশ্রণ যা ব্যক্তির সামগ্রিক সুস্থতা ও জীবনযাত্রার উপর প্রভাব বিস্তার করে। এটি ব্যক্তির শারীরিক স্বাস্থ্য, সামাজিক সম্পর্ক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর সামগ্রিকভাবে প্রভাব বিস্তার করে। অর্থাৎ সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে।

তথ্যসূত্র (Reference)

  • Basu, N.C. Educational and Vocational Guidance.
  • Chauhan, S.S. – Principles and Techniques of Guidance.
  • Dave Indu – The Basic Essentials of Counseling.
  • Kocher, S.K. – Guidance and Counselling in Secondary School
  • NCERT- Guidance and Counseling.

প্রশ্ন – মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় কি?

উত্তর – মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার বিভিন্ন উপায় বর্তমান, সেগুলি হল – সামাজিক সুসম্পর্ক বজায় রাখা, পর্যাপ্ত ঘুম, পারিপার্শ্বিক অবস্থা সম্পর্কে সচেতন, মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা প্রভৃতি।

আরোও পড়ুন

Rate this post

Author Photo

Mr. Debkumar – Founder of Edutiips.com

A teacher and author of several books published by Aheli Publication, including Communication Skills, Aspect of Democratic Citizenship, Sociological Foundation of Education, Computer Applications, Fundamentals of Education, Educational Organization and Planning, and Educational Research.

Leave a Comment

close