Share on WhatsApp Share on Telegram

বহু কৃষ্টি মূলক সমাজের জন্য শিক্ষার ভূমিকা | Role of Education for a Multicultural Society

Join Our Channels

বর্তমানে ভারত সহ বিভিন্ন দেশে ও সমাজে বহু কৃষ্টির সমন্বয় পরিলক্ষিত হয়। এই বহু কৃষ্টি মূলক সমাজের জন্য শিক্ষার ভূমিকা (Role of Education for a Multicultural Society) বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণভাবে পরিলক্ষিত হয়।

সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন সমাজে বিভিন্ন সংস্কৃতির মেলবন্ধন বহু কৃষ্টি মূলক সমাজকে গঠন করতে সহায়তা করে। সমাজের মধ্যে বহু কৃষ্টি মূলক ভাবধারা একটি উন্নত সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। অর্থাৎবহু কৃষ্টি মূলক সমাজে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় থাকে। এখানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, প্রতিবন্ধকতা প্রভৃতি নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর মানুষের অন্তর্ভুক্তি পরিলক্ষিত হয়।

বহু কৃষ্টি মূলক সমাজের ধারণা

সাধারণভাবে যে সমাজব্যবস্থায় জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা প্রতিবন্ধকতা বা অক্ষমতা প্রভৃতি নির্বিশেষে একটি বহুমুখী সমাজ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে তাকে বহু কৃষ্টি মূলক সমাজ বলা হয়ে থাকে।

আমেরিকাতে সর্বপ্রথম বহু কৃষ্টি মূলক সমাজের ধারণার উৎপত্তি হয়। তাছাড়া বর্তমানে ভারতের মতো বহু দেশেও নানা জাতি, ভাষা, সম্প্রদায় ও ধর্মীয় মানুষের বসবাস বহু কৃষ্টি মূলক সমাজের সৃষ্টি করেছে।

বহু কৃষ্টি মূলক সমাজের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান পরিলক্ষিত হয়। অর্থাৎ যে সমাজে বহু কৃষ্টি বা বহু সংস্কৃতি পরিলক্ষিত হয় সেই সমাজ ততো বেশি উন্নতি লাভ করে ও সেই সমাজে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সূচিত হয়।

বহু কৃষ্টি মূলক সমাজের জন্য শিক্ষার ভূমিকা | Role of Education for a Multicultural Society

বহু কৃষ্টি মূলক সমাজ একটি সাংস্কৃতির বহুত্ববাদ যুক্ত সমাজ ব্যবস্থা। এখানে বিভিন্ন সংস্কৃতির অভিন্ন মেলবন্ধন পরিলক্ষিত হয়। বহু কৃষ্টি মূলক সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষার অবদান বর্তমান। অর্থাৎ শিক্ষা বহু কৃষ্টি মূলক সমাজ গঠনের বিশেষ সহায়ক।

বহু কৃষ্টি মূলক সমাজের জন্য শিক্ষার ভূমিকা যে সমস্ত দিক থেকে পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল নিম্নলিখিত –

1. সকলের জন্য শিক্ষা

বহু কৃষ্টি মূলক সমাজ গঠনের জন্য সকলের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থাৎ জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মাধ্যমে বহু কৃষ্টি মূলক বা বহু সংস্কৃতি যুক্তসমাজ গঠন করা সম্ভব. তাই সকলের জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করার মাধ্যমে বহু কৃষ্টি মূলক সমাজের জন্য শিক্ষার ভূমিকা অন্যতম.

2. বৃত্তি শিক্ষার উন্নয়ন

সমাজের সকল স্তরের ব্যক্তিদের বৃত্তি শিক্ষার মাধ্যমে সামাজিক উন্নতি সম্ভব হয়। ফলে সেই সমাজের ব্যক্তিবর্গের মধ্যে পারস্পরিক মেলবন্ধন ও সূচিত হয়। তাই শিক্ষা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবনের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য বৃত্তি শিক্ষার উন্নয়নের মাধ্যমে বহু কৃষ্টি মূলক সমাজ গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

3. অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার বিস্তার

বহু কৃষ্টি মূলক সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে আধুনিককালে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার যে ধারণা তা প্রসারিত হচ্ছে। তাই অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাকে বাস্তবায়িত করার জন্য সকলের সহযোগিতা একান্তভাবে প্রয়োজন। অর্থাৎ অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা হল সমস্ত স্তরের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মূল স্রোতে নিয়ে আসা। অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার প্রসারের মধ্য দিয়ে বহু কৃষ্টি মূলক সমাজ গঠনে শিক্ষা বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

4. মনোবিজ্ঞান সম্মত পাঠক্রম

বহু কৃষ্টি মূলক সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষায় মনোবিজ্ঞান সম্মত পাঠক্রম প্রণয়ন এবং সংস্কার সাধন প্রয়োজন। অর্থাৎ সমাজের চাহিদার উপর গুরুত্ব আরোপ করে পাঠক্রমের সংস্কার সাধন প্রয়োজন। তাই মনোবিজ্ঞান সম্মত পাঠক্রম উন্নয়নের মাধ্যমে বহু কৃষ্টি মূলক সমাজের জন্য শিক্ষার ভূমিকা বর্তমান।

5. অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার দূরীকরণ

বহু কৃষ্টি মূলক সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে সামাজিক বিভিন্ন অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার বিশেষ বাধা স্বরূপ। অর্থাৎ সমাজে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার দূরীকরণ না হলে কোনো সুস্থ সমাজ গড়ে ওঠে না। তাই সামাজিক বিভিন্ন অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার দূরীকরণের মাধ্যমে বহু কৃষ্টি মূলক সমাজের জন্য শিক্ষার ভূমিকা বর্তমান।

6. নেতৃত্বের বিকাশ সাধন

উপযুক্ত শিক্ষা সমাজে অবস্থিত ব্যক্তিবর্গের নেতৃত্বের বিকাশ প্রদান করে। যা বহু কৃষ্টি মূলক সমাজের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক।

7. সামাজিক দক্ষতার বিকাশ

সমাজে অবস্থিত প্রতিটি ব্যক্তির সামাজিক দক্ষতা বিকাশ সাধন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এরই মাধ্যমে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে যে বিভিন্ন সংস্কৃতি বিদ্যমান তার বিকাশ সাধন করা সম্ভব। তাই শিক্ষা সামাজিক দক্ষতা বিকাশ সাধনের মাধ্যমে বহু কৃষ্টি মূলক সমাজ গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

উপসংহার (Conclusion)

পরিশেষে বলা যায়, বর্তমানে বহু কৃষ্টি মূলক সমাজে অনেক সময় বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকে। কিন্তু উপযুক্ত শিক্ষা বহু কৃষ্টি মূলক সমাজের ক্ষেত্রে বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কারণ মানুষ যত শিক্ষিত হবে তত বেশি কুসংস্কার মুক্ত হবে ও সমাজ তত বেশি উন্নতি লাভ করবে।

তথ্যসূত্র (References)

  • Kar. Chintamani, Exceptional Children Their Psychology and Education. Sterling Publication Pvt. Ltd. New Delhi.
  • Kirk, S. A. Educating Exceptional Children. Oxford IBH. New Delhi.
  • Mangal, S. K. Educating Exceptional Children: An Introduction to Special Education. PHI Learning Pvt. Ltd. New Delhi.
  • Panda, K. C. Education of Exceptional Children. Vikas Publishing House Pvt. Ltd. New Delhi.
  • Internet sources

প্রশ্ন – বহু কৃষ্টি ভিত্তিক সমাজ কাকে বলে

উত্তর – যে সমাজব্যবস্থায় বিভিন্ন বৈচিত্রধর্মী মানুষের মিলনস্থল পরিলক্ষিত হয়, সেই সমাজকে বহু কৃষ্টি মূলক সমাজ বলে।

প্রশ্ন – বহু কৃষ্টি ভিত্তিক সমাজের বৈশিষ্ট্য

উত্তর – বহু কৃষ্টি ভিত্তিক সমাজের বৈশিষ্ট্য হল –
i) বিভিন্ন কৃষ্টি বা সংস্কৃতির সমাহার,
ii) গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ,
iii) কুসংস্কার মুক্ত আধুনিক সমাজ ব্যবস্থা প্রভৃতি।

প্রশ্ন – বহু কৃষ্টি মূলক শিক্ষা কি

উত্তর – বহু কৃষ্টি মূলক শিক্ষা হল এমন শিক্ষা যেখানে শ্রেণীকক্ষে সকল শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা একইসঙ্গে শিক্ষা লাভ করে থাকে। এই বহু কৃষ্টি মূলক শিক্ষার উদ্দেশ্য হল সকলের জন্য শিক্ষার সমান সুযোগ সৃষ্টি করা।

আরোও পড়ুন

Rate this post

Mr. Debkumar – Author and Founder of Edutiips.com

Mr. Debkumar – Author and Founder of Edutiips.com

A dedicated educator with 10+ years of teaching experience, UGC NET Qualified, and holder of MA, B.Ed, and M.Phil in Education (University of Calcutta).

He has authored several books published by Aheli Publication, such as Communication Skills, Aspect of Democratic Citizenship, Sociological Foundation of Education, Computer Applications, Fundamentals of Education, Educational Organization and Planning, and Educational Research.

He is also an active contributor on Quora, where he shares expert insights on education, history, and social issues.

Leave a Comment

close