ব্যক্তিগত নির্দেশনা কাকে বলে | ব্যক্তিগত নির্দেশনার সুবিধা ও অসুবিধা | Individual Guidance

নির্দেশনা হল এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে ব্যক্তির বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা হয়ে থাকে। নির্দেশনার বিভিন্ন প্রকারভেদ পরিলক্ষিত হয়, তাদের মধ্যে অন্যতম হল ব্যক্তিগত নির্দেশনা (Individual Guidance)।

বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা বর্তমান। অর্থাৎ নির্দেশনার প্রকৃতি কেমন হবে তা সমস্যার উপর নির্ভর করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের মধ্যে ব্যক্তিগত নির্দেশনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে ব্যক্তিগত নির্দেশনা কাকে বলে, ব্যক্তিগত নির্দেশনার সুবিধা ও অসুবিধা কি তা এখানে আলোচনা করা হল।

ব্যক্তিগত নির্দেশনা কাকে বলে | Individual Guidance

যে নির্দেশনা ব্যক্তির ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানের জন্য সম্পন্ন হয়ে থাকে, তাকে ব্যক্তিগত নির্দেশনা বলে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে যখন তার প্রয়োজন কিংবা সমস্যার সমাধানের জন্য নির্দেশনা দান করা হয়ে থাকে, তখন তাকে ব্যক্তিগত নির্দেশনা বলে। এই নির্দেশনা একক নির্দেশনা নামেও অধিক পরিচিত।

ব্যক্তিগত নির্দেশনা প্রধান উদ্দেশ্য হল ব্যক্তির ব্যক্তিগত সমস্যার সমাধান করা বা ব্যক্তির ব্যক্তিগত চাহিদার পরিতৃপ্তি গঠন।

উদাহরণস্বর বলা যায় – বয়ঃসন্ধিকালের বা কৈশোর কালের ছেলেমেয়েদের মধ্যে যে সমস্ত সমস্যা পরিলক্ষিত হয় সেগুলির যথাযথ সমাধানের জন্য ব্যক্তিগত নির্দেশনা বিশেষ কার্যকরী।

ব্যক্তিগত নির্দেশনার সংজ্ঞা

বিভিন্ন মনোবিদ বিভিন্নভাবে ব্যক্তিগত নির্দেশনা সংজ্ঞা দিয়েছেন, তা হল –

মনোবিদ Hopkins বলেছেন – ব্যক্তিগত নির্দেশনা হল এমন এক ধরনের নির্দেশনা যেটি ব্যক্তির স্বাস্থ্য সমস্যা, প্রাক্ষোভিক সমস্যা এবং অভিযোজনগত সমস্যাগুলির সমাধানে সহায়তা করে থাকে।

আবার, মনোবিদ Wilson বলেছেন – ব্যক্তিগত নির্দেশনা হল ব্যক্তিকে তার শারীরিক মানসিক, সামাজিক, নৈতিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশ এবং অভিযোজনে সহায়তা করা।

ব্যক্তিগত নির্দেশনার সুবিধা

ব্যক্তিগত নির্দেশনা ব্যক্তিকে তার যাবতীয় সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সহায়তা করে থাকে। এই নির্দেশনা যে সমস্ত সুবিধা পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল –

1. ব্যক্তির ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সুবিধা জনক।

2. ব্যক্তির প্রক্ষোভ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে এই নির্দেশনা বিশেষ কার্যকরী।

3. ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়।

4. সমস্যার গভীরে যাওয়া যায়। ফলে সমস্যার সমাধান সম্ভবপর হয়।

5. যে সমস্ত সমস্যা দলগত নির্দেশনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব হয় না, সেগুলি ব্যক্তিগত নির্দেশনা এর মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভবপর হয়।

6. এই নির্দেশনা ব্যক্তিকে তার পরিবেশ অনুযায়ী সঙ্গতিবিধানের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে সাহায্য করে থাকে।

আরোও পোস্ট পড়ুন – Click Here Now

ব্যক্তিগত নির্দেশনার অসুবিধা

ব্যক্তিগত নির্দেশনার বিভিন্ন সুবিধা থাকা সত্ত্বেও, এই নির্দেশনা কিছু অসুবিধা পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল –

1. এই নির্দেশনা পদ্ধতিতে সময় এবং পরিশ্রম উভয়ই অধিক লাগে।

2. ব্যক্তিগত নির্দেশনা পদ্ধতি খরচ সাপেক্ষ হয়ে থাকে।

3. প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তির অভাবে এই নির্দেশনাদান অনেক ক্ষেত্রে কার্যকরী হয় না। তাই এটি বিশেষ অসুবিধাজনক।

4. উপযুক্ত পরিকল্পনার অভাবে এই প্রকার নির্দেশনা অনেক সময় ব্যর্থ হতে পারে।

5. এই প্রকার নির্দেশনায় ব্যক্তিগত প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। অর্থাৎ এই প্রকার নির্দেশনার ফলাফল শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির মতামতের উপর নির্ভরশীল।

উপসংহার (Conclusion)

পরিশেষে বলা যায়, ব্যক্তিগত নির্দেশনা ব্যক্তিকে তার ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে পরিবর্তনশীল পরিবেশের সাথে অভিযোজন করতে সহায়তা করে থাকে। তাই কিছু অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও অন্যান্য নির্দেশনার থেকে ব্যক্তিগত নির্দেশনা ব্যক্তির ব্যক্তিগত সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে বিশেষ উপযোগী।

তথ্যসূত্র (Reference)

  • Basu, N.C. Educational and Vocational Guidance.
  • Chauhan, S.S. – Principles and Techniques of Guidance.
  • Dave Indu – The Basic Essentials of Counseling.
  • Kocher, S.K. – Guidance and Counselling in Secondary School
  • NCERT- Guidance and Counseling.

আরোও পড়ুন

Leave a Comment

close