শিক্ষণের মৌলিক নীতিসমূহ | Principles / Maxims of Teaching

শিক্ষণ একটি ধারাবাহিক কর্মকান্ড। শিক্ষণকে যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে গেলে শিক্ষণের মৌলিক নীতিসমূহ (Principles / Maxims of Teaching) সম্পর্কে শিক্ষককে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করতে হয়। কারণ উপযুক্ত শিক্ষণ শিক্ষার্থীদের শিখনের সহায়ক।

শিক্ষার্থীদের শিক্ষণ শিখনে শ্রেণিশিক্ষকের প্রধান ভূমিকা বর্তমান। তিনি শিক্ষার্থীদের শিখনে আগ্রহী করে তোলার জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে থাকেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হল শিক্ষণের বিভিন্ন নীতি সমূহ। যেগুলি শিখনকে কার্যকরী ও অর্থবহ করে তুলতে সহায়তা করে।

শিক্ষণের মৌলিক নীতিসমূহ | Principles / Maxims of Teaching

শিক্ষণের ক্ষেত্রে শিক্ষকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষণ শিখনে অংশগ্রহণ করানোর জন্য শিক্ষণের মৌলিক নীতিসমূহ অনুসরণ করা একান্ত প্রয়োজন।

তাই শিক্ষণের মৌলিক নীতিসমূহ যে সমস্ত দিক থেকে পরিলক্ষিত হয় সেগুলি হল –

1. জানা থেকে অজানার নীতি

জানা থেকে অজানার নীতি শিক্ষণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নীতি। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা কোনো বিষয় সম্পর্কে পূর্বের অভিজ্ঞতা থাকে বা যে বিষয়ে শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে জ্ঞান অর্জন করেছে। এর উপর ভিত্তি করে শিক্ষক পাঠ উপস্থাপনের সময় শিক্ষার্থীদের জানা বিষয়ের উপর প্রশ্ন করনের মাধ্যমে অজানা বিষয়ের দিকে অগ্রসর হবেন। শিক্ষকের ক্ষেত্রে এই নীতিটি বিশেষ কার্যকর।

2. সরল থেকে জটিল নীতি

উপযুক্ত শিক্ষণের ক্ষেত্রে অন্যতম নীতি হলো সরল থেকে জটিলতার নীতি। অর্থাৎ পাঠদানকালে শিক্ষক মহাশয় শিক্ষার্থীদের প্রথমে সহজ বিষয়গুলি শিখনে সহায়তা করবেন এবং ধীরে ধীরে উক্ত বিষয়ে কঠিন বা জটিলের দিকে অগ্রসর হবেন।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় – প্রথমে শিক্ষক মহাশয় কোনো বিষয় সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করার পর সেই বিষয়ের গভীর অংশে প্রবেশ করবেন। অর্থাৎ এই বিষয়টি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের বোধগম্যতা স্তরের বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।

3. মুর্ত থেকে বিমুর্ততার নীতি

মুর্ত থেকে বিমুর্ততার নীতি শিক্ষণের মৌলিক নীতিসমূহ মধ্যে অন্যতম। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের প্রথমে কোনো বিষয়ের মুর্ত ভাবে পাঠদান করার পর ধীরে ধীরে বিমূর্ত বিষয়ের মধ্যে অগ্রসর হতে হয়। কারণ বিমূর্ত বিষয় শিক্ষার্থীদের কাছে সহজে বোধগম্য হয় না।

অর্থাৎ বিমূর্ত বিষয় চিন্তা করা বা কল্পনা করা শিক্ষার্থীদের কাছে কঠিন হয়ে থাকে। আর অপরদিকে মুহূর্ত বিষয় অপেক্ষাকৃত সহজ হয়ে থাকে। তাই শিক্ষণের ক্ষেত্রে প্রথমে শিক্ষার্থীদের মুর্ত ভাবে শিখন সম্পন্ন হলে তবে ধীরে ধীরে বিমূর্ত বিষয়ের প্রতি পাঠদান করা সহজ হবে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় – প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের বাঘ সম্পর্কে ছবির মাধ্যমে শেখানোর পর তাকে চিড়িয়াখানায় নিয়ে গিয়ে শেখানো যেতে পারে।

4. বিশেষ থেকে সাধারণীকরণের নীতি

বিশেষ থেকে সাধারণীকরণের নীতি শিক্ষণের একটি অন্যতম নীতি। এক্ষেত্রে বিভিন্ন সূত্র, নিয়ম প্রকৃতি ব্যাখ্যা বা আলোচনা সময় উদাহরণ সহযোগে আলোচনা করা বিশেষ ফলপ্রসূ। এর ফলে শিক্ষার্থীরা বিশেষ তথ্য জানার সাথে সাথে সেই তথ্যটি বা বিষয়টি কিভাবে সাধারণ করণ করা যাবে তা চিন্তা করে থাকে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় – নিউটনের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সূত্র প্রয়োগ করে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির ব্যবহারিক প্রয়োগ করা।

এগুলি ছাড়াও শিক্ষণের মৌলিক নীতিসমূহ আরোও যে সমস্ত দিক থেকে পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল –

i) সহজ থেকে কঠিনের নীতি,

উপসংহার (Conclusion)

সর্বোপরি বলা যায়, শিক্ষণের ক্ষেত্রে মৌলিক নীতিসমূহ শিক্ষণ পরিবেশকে যথাযথ করে তোলে। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষকের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আগ্রহ, প্রবণতা, চাহিদা, ক্ষমতা প্রভৃতি দিক বিচার বিবেচনা করে শিক্ষণ নীতিগুলি প্রয়োগ করবেন।

তথ্যসূত্র (References)

  • Aggarwal, I. E.: Essentials of Educational Technology: Teaching Learning, Vikash Publishing House Pvt. Ltd. 2001, New Delhi.
  • Bhatt
  • Bhatt and Sharma S. R.: Educational Technology, Kanika Publishing House, New Delhi.
  • Chauhan, S. S.: Innovations in Teaching Learning Process, Vikash Publication, 1990, New Delhi.
  • Hornby, A.S. 1995. Oxford Advanced Learner Dictionary. New York: Oxford University Press
  • Hughes, R. (2002). Teaching and researching speaking. Edinburgh: Pearson Education.
  • Ravi, S. Samuel, A Comprehensive Study of Education, Fourth Printing-May 2016, Delhi – 110092, ISBN – 978-81-203-4182-1,
  • Internet sources

প্রশ্ন – শিক্ষণের মৌলিক নীতি কি?

উত্তর – শিক্ষণের মৌলিক নীতি গুলি শিক্ষার্থীদের শিখনের সহায়ক। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের আগ্রহ, প্রবণতা, সামর্থ্য অনুযায়ী কোনো বিষয় সম্পর্কে শিখনে সহায়তা ও শিখন পরিবেশ রচনা করা।

আরোও পড়ুন

Leave a Comment

close