শিক্ষাক্ষেত্রে মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব | Importance of Evaluation in Education

আধুনিক শিক্ষাক্ষেত্রে মূল্যায়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই আধুনিক শিক্ষা ক্ষেত্রে মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব (Importance of Evaluation in Education) দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শিক্ষাক্ষেত্রে মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব | Importance of Evaluation in Education

শিক্ষার ধারাবাহিক পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়ার পথে একজন শিক্ষার্থী ধীরে ধীরে বিকশিত হয়। এই শিক্ষা প্রক্রিয়াকে আদর্শ ও শিক্ষার্থীদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ রূপে কার্যকরী করে গড়ে তোলে মূল্যায়ন। তাই আধুনিক শিক্ষার মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব অনেক বেশি।

শিক্ষার মূল্যায়নের উপযোগিতা সম্পর্কে কোঠারি কমিশন (১৯৬৪-৬৬) বলেছেন – মূল্যায়ন পদ্ধতির শিক্ষার্থীর অর্জিত জ্ঞানের বৈধ ও নির্ভরযোগ্য পরিমাপ করে। এবং শিক্ষার্থীর পরিবর্তনের বা বিকাশের যেসব গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি রচনা ভিত্তিক পরীক্ষার মাধ্যমে পরিমাপ করা যায় না সেগুলির সঠিক পরিমাপ করে থাকে।

তাছাড়া শিক্ষাক্ষেত্রে মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব যে সমস্ত দিক থেকে বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয় সেগুলি হল নিম্নলিখিত –

শিক্ষার উদ্দেশ্য নির্ধারণ

মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার উদ্দেশ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া যায়। তাই মূল্যায়ন শিক্ষার উদ্দেশ্যকে স্পষ্টভাবে সচেতন করতে সহায়তা করে থাকে।

শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি পরিমাপ

শিক্ষায় মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর অগ্রগতি বা বিকাশের পরিমাপ তাৎপর্যপূর্ণ করা সম্ভব হয়। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের কতটা অগ্রগতি বা বিকাশ ঘটেছে তা মূল্যায়নের মাধ্যমে জানা সম্ভব।

পাঠক্রমের বিচারকরন

শিক্ষায় মূল্যায়ন পাঠক্রমের বিচার করে থাকে। শিক্ষার লক্ষ্যে পৌঁছানোর অন্যতম উপায় হল পাঠক্রম। আর মূল্যায়নের মাধ্যমে এই পাঠক্রমের সংস্কার সাধনে ও পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব হয়। তাই আধুনিক শিক্ষা ক্ষেত্রে পাঠক্রমে সংস্কার সাধনের ক্ষেত্রে মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব বর্তমান।

শিক্ষাদান পদ্ধতির বিচারকরন

শিক্ষাদান পদ্ধতির বিচারকরন বা সাফল্য ও অসাফল্য নির্ণয়ের ক্ষেত্রে মূল্যায়ন বিশেষভাবে সাহায্য করে। তাই মূল্যায়নের মাধ্যমে কোন নতুন শিক্ষা পদ্ধতির যাচাইকরন সহজে সম্ভবপর হয়।

কার্যকারিতা বিচার

শিক্ষায় মূল্যায়ন শিক্ষার্থীর অর্জিত জ্ঞান ও পরিমাপক কৌশলগুলির কার্যকারিতা ও যথার্থতা বিচার করে। তাই শিক্ষার্থী শিক্ষাক্ষেত্রে কতদূর অগ্রসর হয়েছে তা তাৎপর্যপূর্ণভাবে মূল্যায়ন ব্যাখ্যা করতে সক্ষম।

শিক্ষামূলক ও বৃত্তিমূলক নির্দেশনায় সহায়তা

শিক্ষামূলক ও বৃত্তিমূলক নির্দেশনার ক্ষেত্রে মূল্যায়নের যথেষ্ট উপযোগিতা বর্তমান। অর্থাৎ মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত ও বৃত্তিগত দিক যাচাইকরন সম্ভবপর হয়। যার ফলে শিক্ষার্থীরা কিভাবে গড়ে উঠবে ও কোন বৃত্তি বা পেশা গ্রহণ করবে তা সহজে নির্ণয় করা যায়।

আরোও পোস্ট পড়ুন – Click Here Now

উপসংহার (Conclusion)

পরিশেষে বলা যায়, মূল্যায়ন শিক্ষাক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মূল্যায়নের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর সার্বিক বিকাশের ধারা কিভাবে সুসম্পন্ন হচ্ছে তার ধারাবাহিকভাবে ব্যাখ্যা করা সম্ভবপর হয়। তাই বর্তমান শিক্ষার ক্ষেত্রে গতানুগতিক পরীক্ষার শব্দটির পরিবর্তে মূল্যায়ন কথাটি অধিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

তথ্যসূত্র (Reference)

  • Essentials of Examinations System: Evaluation, Test and Measurement – J.C. Aggarwal – Vikash Publishing House Pvt. Ltd.
  • Statistics in Psychology and Education – S.K. Mangal – PHI Learning Pvt. Ltd.
  • E. B. Hurlock – Child Development – Anmol Publication Pvt. Ltd
  • L. E. Berk – Child Development – PHI Ltd
  • Importance of Evaluation in Education
  • Internet Sources

প্রশ্ন – শিক্ষা ক্ষেত্রে মূল্যায়ন কেন করা হয়?

উত্তর – শিক্ষার্থীদের সার্বিক বিকাশ কতটা কিভাবে হয়েছে তা যাচাই করার জন্য শিক্ষা ক্ষেত্রে মূল্যায়ন করা হয়। অর্থাৎ মূল্যায়ন শিক্ষার উদ্দেশ্যকে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করে থাকে।

আরোও পড়ুন

Leave a Comment

close