পরিবেশ বিদ্যার প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করো | Multidisciplinary Nature of Environmental Studies

বর্তমানকালে শিক্ষাক্ষেত্রে পরিবেশ বিদ্যার গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই পরিবেশ বিদ্যার প্রকৃতি (Nature of Environmental Studies) বা শিক্ষায় পরিবেশ বিদ্যার অন্তর্ভুক্তি একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে বিবেচিত হয়।

পরিবেশ বিদ্যার প্রকৃতি | Nature of Environmental Studies

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে পরিবেশ বিদ্যা বিষয়টির গুরুত্বপূর্ণভাবে পর্যালোচনা করা হয়। অর্থাৎ সারা বিশ্বে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশ সচেতনতার জন্য বর্তমান শিক্ষাক্ষেত্রে সহ নানা ক্ষেত্রে পরিবেশ বিদ্যার অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে।

সাধারণভাবে পরিবেশবিদ্যা হল বিজ্ঞানের একটি নির্দিষ্ট শাখা, যার মধ্যে ভৌত বা প্রাকৃতিক পরিবেশ, জীব পরিবেশ এবং সামাজিক পরিবেশের বৈশিষ্ট্য, পারস্পরিক সম্পর্ক ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের বিষয়ে পঠন পাঠন করা হয়।

পরিবেশ বিদ্যার প্রকৃতি বহুমুখী। পরিবেশ বিদ্যার বহুমুখী প্রকৃতি সম্পর্কে এখানে আলোচনা করা হলো।

পরিবেশবিদ্যা ও বাস্তুতন্ত্র

১৮৬৬ সালে বিশিষ্ট প্রাণিবিদ Ernst Haeckel সর্বপ্রথম বাস্তুতন্ত্র শব্দটি ব্যবহার করেছেন। পরিবেশ বিদ্যার অধ্যায়নের একটি অন্যতম দিক হলো বাস্তুতন্ত্র। কারণ পরিবেশের মধ্যে বাস্তুতন্ত্র অন্তর্ভুক্ত। প্রাণী ও পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্ক বোঝাতে বাস্তুতন্ত্র কথাটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

পরিবেশ বিদ্যা ও অর্থনীতি

পরিবেশবিদ্যার সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংযুক্ত সেটি হল অর্থনীতি। তাই অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং পরিবেশ উন্নয়ন পাশাপাশি চলতে পারে না। অর্থাৎ অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে পরিবেশের অবক্ষয় দেখা দেয়। তাই পরিবেশ ও অর্থনীতির মধ্যে তখনই ভারসাম্য বজায় থাকবে যখন দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব করা হবে। তাই পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখার মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা আবশ্যক।

পরিবেশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ

পরিবেশের একটি বিপরীতধর্মী দিক হল দূষণ। অর্থাৎ মানুষের জীবনযাত্রার মানের পরিবর্তন বা উন্নতির সাথে সাথে পরিবেশের অবক্ষয় পরিলক্ষিত হয়। তাই পরিবেশ বিদ্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল পরিবেশকে ঠিক রাখতে হলে দূষণকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

পরিবেশ ও সম্পদ সংরক্ষণ

পরিবেশের মধ্যে বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদ বিদ্যমান। যেমন – জল, বায়ু, খনিজ পদার্থ, খাদ্য প্রভৃতি। বর্তমানে এই প্রাকৃতিক সম্পদগুলো দ্রুত ব্যবহারের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে প্রাকৃতিক সম্পদের ভান্ডার নিঃস্ব হয়ে যাবে। তাই পরিবেশ ও সম্পদ সংরক্ষণের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা দরকার।

আরোও পোস্ট পড়ুন – Click Here Now

এগুলি ছাড়াও পরিবেশ বিদ্যার প্রকৃতি (Nature of Environmental Studies)-র মধ্যে যে সমস্ত বিষয় অন্তর্গত, এগুলি হল নিম্নলিখিত –

i) পরিবেশ বিদ্যা পরিবেশগত সকল সমস্যা ও বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত।

ii) পরিবেশ বিদ্যার বিভিন্ন প্রকার শক্তি ও তাদের বিকল্প উৎস সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে।

iii) পরিবেশ বিদ্যা সম্পূর্ণরূপে প্রাকৃতিক পরিবেশ দ্বারা সৃষ্ট। যা কিছু মানুষ দ্বারা সৃষ্ট তা পরিবেশকে দূষণ করে। তাই পরিবেশ বিদ্যা প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল।

iv) পরিবেশ বিদ্যা ভৌত, জৈবিক পরিবেশ সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জনের সাহায্য করে এবং বাস্তব জীবনে এগুলি তাৎপর্য অনুধাবনের সাহায্য করে।

v) পরিবেশ বিদ্যার বিষয়ের মধ্যে জীব বিদ্যা, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা, ভূতত্ত্ব, ভূগোল, অর্থনীতি, কৃষি বিদ্যা, আইন বিদ্যা, নীতিবিদ্যা প্রভৃতি কমবেশি পরিলক্ষিত হয়।

উপসংহার (Conclusion)

পরিশেষে বলা যায়, পরিবেশ বিদ্যা প্রাকৃতিক পরিবেশের যাবতীয় উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত। মানুষের জীবন যাত্রার পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিবেশ বিদ্যার প্রকৃতি পরিবর্তিত হয়ে থাকে।

তথ্যসূত্র (Reference)

  • Essentials of Examinations System : Evaluation, Test and Measurement – J.C. Aggarwal – Vikash Publishing House Pvt. Ltd.
  • Statistics in Psychology and Education – S.K. Mangal – PHI Learning Pvt. Ltd.
  • E. B. Hurlock – Child Development – Anmol Publication Pvt. Ltd
  • L. E. Berk – Child Development – PHI Ltd
  • Internet Sources

প্রশ্ন – পরিবেশ বিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্য কি কি?

পরিবেশ বিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্য হল – এটি বহু বিষয়ের সমন্বয়সাধক বিষয়। অর্থাৎ এই বিজ্ঞানের মধ্যে জীববিদ্যা, রসায়ন, ভৌতবিদ্যা, ভূতত্ত্ব, ভূগোল, নীতিবিদ্যা, সমাজবিদ্যা, অর্থনীতি প্রভৃতি বিশেষভাবে অন্তর্ভুক্ত।

আরোও পড়ুন

Leave a Comment

close