শিখন অক্ষমতার প্রকারভেদ | Types of Learning Disability

শিখন অক্ষমতা হল শিক্ষার্থীদের শেখার অক্ষমতা। প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী শিখন অক্ষমতার প্রকারভেদ (Types of Learning Disability) বিভিন্ন প্রকৃতির হয়ে থাকে।

শিখন অক্ষমতা শিক্ষার্থীদের শেখার প্রতি অক্ষমতাকে নির্দেশ করে থাকে। তাই শিখন অক্ষমতা একজন শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনকে ব্যাহত করে। ফলে শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের তুলনায় শিক্ষাগত পারদর্শিতায় পিছিয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোন প্রকারের শিখন অক্ষমতা পরিলক্ষিত হয় সেগুলি এখানে আলোচনা করা হলো।

শিখন অক্ষমতার প্রকারভেদ | Types of Learning Disability

শিখন অক্ষমতা একটি মানসিক বা স্নায়বিক অসুখ। যার ফলে শিক্ষার্থীরা মৃদু বুদ্ধি সম্পন্ন প্রকৃতির হয় ও শিখনের ক্ষেত্রে অক্ষমতা দেখা দেয়। তাই শিখন অক্ষমতা শিক্ষার্থীদের শিখনকে ব্যাহত করে থাকে।

শিখন অক্ষমতা শব্দটির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের অক্ষমতাকে দিক নির্দেশ করে থাকে। যেমন পড়া, বানান করা, লেখা, অংক করা বা গণনা করা প্রভৃতি। শিখন অক্ষমতার এই বিভিন্ন দিককে গুরুত্ব আরোপ করে শিখন অক্ষমতার প্রকারভেদকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। সেগুলি হল নিম্নলিখিত –

1. ডিসলেক্সিয়া (Dyslexia) – পঠনগত অক্ষমতা

এটি এমন এক ধরনের সমস্যা যেখানে শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে পড়তে পারে না। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের রিডিং পড়তে বা বানান করে পড়তে অক্ষমতাই হলো ডিসলেক্সিয়া।

এটি এমন একটি সমস্যা যেখানে শিশুদের স্বাভাবিক শিশুদের তুলনায় পড়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা দেখা দেয়। এটি একটি মানসিক বা স্নায়বিক সমস্যা যেখানে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ায় অনেকটা পিছিয়ে থাকে। তাই অনেক মনোবিদগণ এটিকে পঠন অক্ষমতা হিসেবে চিহ্নিতকরণ করেন।

2. ডিসগ্রাফিয়া (Dysgraphia) – লিখন অক্ষমতা

লিখন অক্ষমতা বা ডিসগ্রাফিয়া হল এমন একটি সমস্যা যেখানে শিক্ষার্থীরা সঠিক বানান লিখতে ব্যর্থ হয়। সাধারণভাবে লিখনের জন্য মস্তিষ্কের বিভিন্ন ক্রিয়া বিশেষ করে মনোযোগ, শব্দ ভান্ডার, ব্যকরণ প্রভৃতি যুক্ত থাকে। কিন্তু কোনো শিক্ষার্থী যদি যথাযথ ব্যাকরণ বা সঠিকভাবে লিখতে ব্যর্থ হয় তখন তাকে লিখন অক্ষমতা বলে।

3. ডিসক্যালকুলিয়া (Dyscalculia) – গাণিতিক অক্ষমতা

ডিসক্যালকুলিয়া বা গাণিতিক অক্ষমতা হলো এমন একটি অক্ষমতা যেখানে শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে সংখ্যার ব্যবহার, সাধারণ যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ প্রভৃতি গাণিতিক প্রক্রিয়া করতে অক্ষম হয়। অর্থাৎ এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা গণিতের বিভিন্ন সংখ্যা ও চিহ্নের ব্যবহার, যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগ প্রভৃতি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হওয়াকে বোঝায়।

উপসংহার (Conclusion)

পরিশেষে বলা যায়, শিখন অক্ষমতা এমন এক ধরনের অক্ষমতা যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত পারদর্শিতা ব্যাহত হয়। অর্থাৎ শিশুরা স্বাভাবিক শিক্ষার্থীদের তুলনায় শিখন এর ক্ষেত্রে ধীরগতি সম্পন্ন হয়ে থাকে। এই অক্ষমতা শিক্ষার্থীদের মানসিক বা স্নায়বিক সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।

ব্যক্তি ভেদে শিখন অক্ষমতার প্রকারভেদ বিভিন্ন প্রকৃতির হয়ে থাকে। অর্থাৎ কোনো কোনো শিক্ষার্থীর মধ্যে মৃদুমাত্রার শিখন অক্ষমতা আবার তীব্রতর মাত্রার শিখন অক্ষমতা দেখা যায়। তবে উপযুক্ত পরিচর্যা এবং বিকল্প শিক্ষাদান পদ্ধতির মাধ্যমে এই ধরনের অক্ষমতা যুক্ত শিশুদের শিক্ষাদান করা হয়ে থাকে।

তথ্যসূত্র (References)

  • Kar. Chintamani, Exceptional Children Their Psychology and Education. Sterling Publication Pvt. Ltd. New Delhi.
  • Kirk, S. A. Educating Exceptional Children. Oxford IBH. New Delhi.
  • Mangal, S. K. Educating Exceptional Children: An Introduction to Special Education. PHI Learning Pvt. Ltd. New Delhi.
  • Panda, K. C. Education of Exceptional Children. Vikas Publishing House Pvt. Ltd. New Delhi.
  • Internet sources

প্রশ্ন – শিখন অক্ষমতা কত প্রকার?

উত্তর – সাধারণভাবে শিখন অক্ষমতা তিন প্রকারের। যথা – পঠনগত অক্ষমতা, লিখন অক্ষমতা এবং গাণিতিক অক্ষমতা। এছাড়াও আরো যে সমস্ত শিখন অক্ষমতা দেখা দেয় তার মধ্যে অন্যতম হল – উচ্চারণ করার অক্ষমতা, কথা বলার অক্ষমতা, ভাষা বিকাশের অক্ষমতা প্রভৃতি।

প্রশ্ন – শিখন অক্ষমতা গুলি কি কি?

উত্তর – শিখন অক্ষমতা গুলি হল – পঠনগত অক্ষমতা, গাণিতিক অক্ষমতা, লিখন অক্ষমতা, উচ্চারণগত ক্ষমতা, ভাষা বিকাশের অক্ষমতা প্রভৃতি।

আরোও পড়ুন

2 thoughts on “শিখন অক্ষমতার প্রকারভেদ | Types of Learning Disability”

Leave a Comment

close