অক্ষমতা যুক্ত শিশুদের বিভিন্ন ভাগের মধ্যে মূক ও বধির শিশু হল অন্যতম। মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতি (Method of Teaching the Deaf and Dumb)-র মাধ্যমে সঠিকভাবে লালন-পালন করা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
সমাজের মধ্যে মূক ও বধির শিশুরা সর্বদা অবহেলিত, লাঞ্ছিত ও বঞ্চনা শিকার হয়ে থাকে। অর্থাৎ এই সমস্ত শিশুরা ইন্দ্রিয়জনিত অক্ষমতার জন্য সমাজের সঙ্গে অভিযোজন করতে ব্যর্থ হয়। তাছাড়া সমাজের বিভিন্ন মানুষজন তাদের এই অক্ষমতা নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে থাকে। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষা ক্ষেত্রে ও সাংবিধানিক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে এই সমস্ত অক্ষমতা যুক্ত শিশুদের উপযুক্ত শিক্ষার মাধ্যমে সমাজ উপযোগী করে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।
মূক ও বধির শিশু
মূক ও বধির শিশু বলতে কারা বোঝায় তা এখানে আলোচনা করা হল –
i) মূক শিশু
মূক শিশু বলতে বোঝায় যারা কথা বলতে পারে না। অর্থাৎ স্বরযন্ত্রের ত্রুটির ফলে যে সমস্ত শিশুর কথা বলার মধ্যে অস্পষ্টতা বা একেবারে কথা বলতে না পারা তাদেরকে, মূক শিশু বলে।
এই রোগের কারণ হল – বংশগতি, জন্মগত ত্রুটি বা জন্মগত স্বরযন্ত্রের ত্রুটি, দুর্ঘটনা জনিত কারণ বা কঠিন রোগ ব্যাধি প্রভৃতি।
ii) বধির শিশু
বধির শিশু বলতে বোঝায় যে সমস্ত শিশু শ্রবণ যন্ত্রের ত্রুটির ফলে শুনতে পায় না বা কম শুনতে পায়। এটি একটি ইন্দ্রিয়গত অক্ষমতা।
এই রোগের কারণ হল – বংশগত বা বংশগতি, কানের গঠনগত ত্রুটি, জন্মগত কারণ, দুর্ঘটনা জনতা কারণ, কানের কোনো অসুখ জনিত কারণ প্রভৃতি।
মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতি | Method of Teaching the Deaf and Dumb
মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতি বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। অর্থাৎ মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষাদানের জন্য বিভিন্ন কার্যকরী পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে, এখানে সেগুলি আলোচনা করা হল –
মূক শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতি
মূক শিশুরা যেহেতু কথা বলতে পারেনা, তাই এদের শিক্ষাদান পদ্ধতি বিজ্ঞানসম্মত প্রকৃতির হয়ে থাকে। মূক শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম পদ্ধতি গুলি হল –
i) ওষ্ঠ পঠন পদ্ধতি
ii) কম্পন ও স্পর্শ পদ্ধতি
iii) দর্শন ভিত্তিক পদ্ধতি
iv) শ্রবনমূলক পদ্ধতি
v) আঙুলের দ্বারা বানান শিখন
বধির শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতি
বধির শিশুরা কানে শুনতে পায় না। তাই তাদের শিক্ষার জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়ে থাকে। বৌদির শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম হল –
i) দর্শন ভিত্তিক পদ্ধতি
ii) ওষ্ঠ পঠন পদ্ধতি
iii) কম্পন ও স্পর্শ পদ্ধতি
উপসংহার (Conclusion)
পরিশেষে বলা যায়, মূক ও বধির শিশুদের উপযুক্ত শিক্ষার (Method of Teaching the Deaf and Dumb) মাধ্যমে সমাজ উপযোগী করে তোলা বিশেষ প্রয়োজন। যাতে তারা কারো সাহায্য ব্যতীত নিজেরাই নিজেদের জীবনের যাবতীয় কাজকর্ম করতে পারে। অর্থাৎ উপযুক্ত শিক্ষার মাধ্যমে তাদেরকে সম্মানের সাথে বেঁচে থাকতে সাহায্য করা।
তথ্যসূত্র (References)
- Kar. Chintamani, Exceptional Children Their Psychology and Education. Sterling Publication Pvt. Ltd. New Delhi.
- Kirk, S. A. Educating Exceptional Children. Oxford IBH. New Delhi.
- Mangal, S. K. Educating Exceptional Children: An Introduction to Special Education. PHI Learning Pvt. Ltd. New Delhi.
- Panda, K. C. Education of Exceptional Children. Vikas Publishing House Pvt. Ltd. New Delhi.
- Internet sources
প্রশ্ন – মূক ও বধিরদের জন্য মৌখিক পদ্ধতি আবিষ্কার করেন কে?
উত্তর – মূক ও বধিরদের জন্য মৌখিক পদ্ধতি আবিষ্কার করেন জয়ান পাবলো বনেঁ (Juan Pablo Bonet)।
আরোও পড়ুন
- অন্তর্ভুক্তিকরণের বাধা সমূহ | Barriers to Inclusion
- তপশিলি জাতি ও উপজাতি কাকে বলে | Concept of Scheduled Castes and Tribes
- বহু কৃষ্টি মূলক সমাজের জন্য শিক্ষার ভূমিকা | Role of Education for a Multicultural Society
- শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য শিক্ষার ভূমিকা | Role of Education for Peaceful Coexistence
- বাধামুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে সমাজের ভূমিকা | Role of Society in Creating Barrier Free Environment
- বাধামুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে বিদ্যালয়ের ভূমিকা | Role of School in Creating a Barrier Free Environment
1 thought on “মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষাদান পদ্ধতি | Method of Teaching the Deaf and Dumb”