শিখন ও শিক্ষণ এর মধ্যে পার্থক্য | Difference Between Learning and Teaching

শিক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ দিক হল শিখন ও শিক্ষণ। অর্থাৎ যে কোনো শিক্ষা ব্যবস্থাকে কার্যকরী করে তোলার জন্য শিখন ও শিক্ষণ (Learning and Teaching) বিশেষ উপযোগী।

শিক্ষাদান কার্যকে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে শিখনশিক্ষণ একটি কার্যকরী প্রক্রিয়া শিখন এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জ্ঞান অর্জন করে আর শিক্ষনের মাধ্যমে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করে। এখানে শিখন ও শিক্ষনের মধ্যে যে পার্থক্যগুলি বর্তমান, সেগুলি হল নিম্নলিখিত –

শিখন ও শিক্ষণ এর মধ্যে পার্থক্য | Difference Between Learning and Teaching

শিখনশিক্ষণ যে-কোনো শিক্ষা ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিখন ও শিক্ষণ ছাড়া কোন শিক্ষা ব্যবস্থা সুসম্পন্ন হয় না। কিন্তু তা সত্বেও শিখন ও শিক্ষণ এর মধ্যে পার্থক্য (Learning and Teaching) বর্তমান, সেগুলি হল নিম্নলিখিত –

প্রথমত – ধারণাগত পার্থক্য

শিখন হল অতীত অভিজ্ঞতা এবং প্রশিক্ষণের প্রভাবে শিক্ষার্থীদের আচরণ ধরার পরিবর্তন বা নতুন আচরণ আয়ত্তকরন।

আর অপরদিকে শিক্ষণ হল এক ধরনের আন্তব্যক্তিক প্রভাব, যার লক্ষ্য হল অন্য ব্যক্তির আচরণের পরিবর্তন ঘটানো।

দ্বিতীয়ত – সংজ্ঞাগত পার্থক্য

বিশিষ্ট মনোবিদ হিলগার্ড বলেছেন – শিখন হল বারবার অনুশীলনের ফলে নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে প্রাণীর আচরণের পরিবর্তন, যা সহজাত প্রতিক্রিয়া, পরিণমন বা প্রাণীর অস্থায়ী অবস্থার কারণে ঘটে না।

অপরদিকে আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছেন – জ্ঞান ও সৃষ্টিশীল প্রকাশের মধ্য দিয়ে আনন্দ জাগ্রত করাই হলো শিক্ষণ শিল্পের প্রধান লক্ষ্য।

তৃতীয়ত – লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যেগত পার্থক্য

শিখনের উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও চাহিদা অনুযায়ী জ্ঞানার্জনে সহায়তা করা। অর্থাৎ শিখন এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের চাহিদার উপর নির্ভর করে।

আর অপরদিকে শিক্ষনের একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্তমান।

চতুর্থত – শিখন ও শিক্ষনে যুক্ত ব্যক্তিবর্গ

শিখন সম্পন্ন হয় শিক্ষার্থীদের দ্বারা। অর্থাৎ শিখনে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।

আর অপরদিকে শিক্ষণ সম্পন্ন হয় শিক্ষকের দ্বারা। অর্থাৎ শিক্ষনে শিক্ষক মহাশয় অংশগ্রহণ করেন।

পঞ্চমত – জ্ঞান অর্জনগত পার্থক্য

শিখনে শিক্ষার্থীরা জ্ঞান অর্জন করে থাকে। অর্থাৎ শিখন হল জ্ঞান অর্জনকারী প্রক্রিয়া।

আর অপরদিকে শিক্ষণে শিক্ষক মহাশয় শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করে থাকে। অর্থাৎ শিক্ষণ হল জ্ঞান প্রদানকারী কৌশল বা দক্ষতা।

ষষ্ঠত – প্রতিক্রিয়াগত পার্থক্য

শিখন হল একমুখী প্রক্রিয়া। অর্থাৎ এখানে শিক্ষার্থীরা কেবলমাত্র জ্ঞান অর্জন করে থাকে। কিন্তু বর্তমানে শিখনকে দ্বিমুখী প্রক্রিয়াহিসেবে গণ্য করা হয়।

আর অপরদিকে শিক্ষণ হল দ্বিমুখীপ্রক্রিয়া। অর্থাৎ এখানে ফিডব্যাক বা প্রতিক্রিয়া আদান-প্রদানের সুযোগ থাকে।

আরোও পোস্ট পড়ুন – Click Here Now

উপসংহার (Conclusion)

সর্বোপরি বলা যায়, যে-কোনো শিক্ষা প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল শিখনশিক্ষণ। এই দুটির মধ্যে পার্থক্য থাকলেও শিখন ও শিক্ষণ (Learning and Teaching) একে অপরের পরিপূরক। কারণ শিক্ষণ ছাড়া শিখন প্রক্রিয়া কখনোই সুসম্পন্ন হতে পারে না। তাই শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষণ ও শিখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে গণ্য করা হয়।

তথ্যসূত্র (References)

  • Aggarwal, I. E.: Essentials of Educational Technology: Teaching Learning, Vikash Publishing House Pvt. Ltd. 2001, New Delhi.
  • Bhatt
  • Bhatt and Sharma S. R.: Educational Technology, Kanika Publishing House, New Delhi.
  • Chauhan, S. S.: Innovations in Teaching Learning Process, Vikash Publication, 1990, New Delhi.
  • Hornby, A.S. 1995. Oxford Advanced Learner Dictionary. New York: Oxford University Press
  • Hughes, R. (2002). Teaching and researching speaking. Edinburgh: Pearson Education.
  • Ravi, S. Samuel, A Comprehensive Study of Education, Fourth Printing-May 2016, Delhi – 110092, ISBN – 978-81-203-4182-1,
  • Internet sources

প্রশ্ন – শিখন ও শিক্ষণের মধ্যে পার্থক্য কি?

উত্তর – শিখনের উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের আগ্রহ ও চাহিদা অনুযায়ী জ্ঞানার্জনে সহায়তা করা। আর অপরদিকে শিক্ষনের একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বর্তমান।

প্রশ্ন – শিখন ও শিক্ষণের মধ্যে প্রথম কোনটি আসে?

উত্তর – শিখন ও শিক্ষণের মধ্যে প্রথম শিক্ষণ আসে।

আরোও পড়ুন

Leave a Comment

close