Share on WhatsApp Share on Telegram

যোগাযোগ প্রক্রিয়ার নীতি সমূহ আলোচনা কর | Effective Principles of Communication

Join Our Channels

যোগাযোগ হল ব্যক্তির চিন্তা, ধারণা, অনুভূতি, তথ্য ইত্যাদি আদান-প্রদানের একটি দ্বিমুখী প্রক্রিয়া। কার্যকরী যোগাযোগ প্রক্রিয়ার নীতি সমূহ (Principles of Communication) বিভিন্ন দিক থেকে পরিলক্ষিত হয়।

যোগাযোগ প্রক্রিয়ার নীতি সমূহ | Principles of Communication

Communication -এর বাংলা অর্থ হল – যোগাযোগ বা যোগাযোগ স্থাপন করা। যোগাযোগের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় দুই বা ততোধিক ব্যক্তিবর্গের প্রয়োজন হয়। যোগাযোগ একটি সিস্টেমেটিক ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। কার্যকরী যোগাযোগ প্রক্রিয়ার নীতি বিভিন্ন দিক থেকে পরিলক্ষিত হয়। কার্যকরী যোগাযোগ প্রক্রিয়ার নীতি সমূহ নিম্নে আলোচনা করা হল।

1. বিষয়বস্তুর উপযুক্ততার নীতি

যোগাযোগ প্রক্রিয়া নীতিগুলোর মধ্যে অন্যতম হল বিষয়বস্তুর উপযুক্ততার নীতি। অর্থাৎ যোগাযোগ প্রক্রিয়া সফলতা বিষয়বস্তুর উপর নির্ভরশীল। তাই যোগাযোগের বিষয়বস্তু প্রেরক ও গ্রাহকের কাছে যথোপযুক্ত, প্রাসঙ্গিক ও সহজবদ্ধ হলে যোগাযোগ সহজে সম্পন্ন হয়। কারণ বিষয়বস্তুর উপর যোগাযোগের প্রক্রিয়া নির্ভরশীল।

2. উপযুক্ত মাধ্যম নির্বাচনের নীতি

বিষয়বস্তুর পাশাপাশি যোগাযোগের জন্য গ্রাহক ও প্রেরকের মধ্যে মাধ্যম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই উপযুক্ত যোগাযোগ প্রক্রিয়ায় মাধ্যম নির্বাচনের নীতি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মাধ্যম ছাড়া যোগাযোগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ব্যর্থতায় পর্যবেষিত হবে। তাই মাধ্যম উপযুক্ত না হলে তা গ্রাহকের তথ্য উপলব্ধিতে সাহায্য করে না।

3. প্রতিক্রিয়ার নীতি

কার্যকরী যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া বা ফিডব্যাক -এর নীতি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রেরক যখন কোনো বার্তা গ্রাহকের কাছে পেশ করেন বা পাঠান তখন গ্রাহক যদি সেই বার্তার প্রতিক্রিয়া না দেন তাহলে যোগাযোগ প্রক্রিয়া ব্যর্থ হতে পারে।

তাই যোগাযোগ প্রক্রিয়া গ্রাহকের কাছ থেকে উপযুক্ত প্রতিক্রিয়ার উপর নির্ভরশীল। কারণ এর মাধ্যমে প্রেরক জানতে বা বুঝতে পারেন গ্রাহক তার পাঠানো বার্তাটি কতটুকু বুঝতে পেরেছেন বা পারেননি।

4. সঞ্চালন ও মিথস্ক্রিয়ার নীতি

কার্যকরী যোগাযোগের ক্ষেত্রে অন্যতম নীতি হলো সঞ্চালন ও মিথস্ক্রিয়ার নীতি। অর্থাৎ যোগাযোগ দ্বিমুখী প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় একদিকে থাকেন গ্রাহক ও অন্যদিকে থাকেন প্রেরক। গ্রাহক ও প্রেরকের মধ্যে কোনো বার্তার সঞ্চালন ও মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়। তাই গ্রাহক ও প্রেরকের মধ্যে সঞ্চালন ও মিথস্ক্রিয়া যত বেশি সংঘটিত হবে যোগাযোগের সাফল্য সেই অনুপাতে বৃদ্ধি পাবে।

5. যোগ্যতার নীতি

কার্যকরী যোগাযোগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা নীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রেরক ও গ্রাহকের মধ্যে সম যোগ্যতা সম্পন্ন না হলে যোগাযোগ সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে না। তাই যোগাযোগ প্রক্রিয়ায় প্রেরক ও গ্রাহকের মধ্যে সামর্থ এবং যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। যা যোগাযোগ ব্যবস্থার গুণমান বৃদ্ধিতে সহায়ক।

6. সাহায্যদানকারীর নীতি

যোগাযোগ এককভাবে সংঘটিত হয় না। যোগাযোগের ক্ষেত্রে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। অর্থাৎ গ্রাহক ও প্রেরকের মধ্যে সুসম্পর্ক স্থাপিত হলে তবে যোগাযোগ সুস্থভাবে সম্পন্ন হবে।

অর্থাৎ শ্রোতা বক্তার বক্তব্যকে পেশ করার বিষয়ে সাহায্য করলে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত হয়ে থাকে। কারণ অনেক সময় ফিডব্যাক বা প্রতিক্রিয়ার অভাবে যোগাযোগ সেখানেই শেষ হয়ে যেতে পারে। তাই কার্যকরী যোগাযোগ ব্যবস্থার একটি অন্যতম নীতি হলো সাহায্যদানকারীর নীতি।

7. মনোযোগদানকারীর নীতি

কার্যকারী যোগাযোগের ক্ষেত্রে মনোযোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ যে ব্যক্তি যত মনোযোগী এই ব্যক্তি অন্যের সাথে যোগাযোগ করতে তত বেশি পারদর্শী হয়ে থাকে। তাই বক্তা যখন কোনো বার্তা বা তথ্য শ্রোতার কাছে বা প্রেরকের কাছে প্রেরণ করেন, তখন শ্রোতা যদি মনোযোগী না হয় তাহলে যোগাযোগ ব্যর্থ হতে পারে। তাই এক্ষেত্রে মনোযোগদানকারীর নীতি কার্যকরী যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি।

উপসংহার (Conclusion)

সর্বোপরি বলা যায়, কার্যকরী যোগাযোগের ক্ষেত্রে যোগাযোগের বিভিন্ন নীতিগুলি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ যোগাযোগ ব্যবস্থা তখনই কার্যকরী ভাবে গড়ে উঠবে যখনই যোগাযোগের বিভিন্ন নীতিগুলি অনুসরণ করা হবে। তাই যোগাযোগের উপরিউক্ত নীতিগুলোর মাধ্যমে প্রেরক গ্রাহকের সাথে সঠিকভাবে ও সুসম্পন্নভাবে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হবে।

তথ্যসূত্র (References)

  • Aggarwal, I. E.: Essentials of Educational Technology: Teaching Learning, Vikash Publishing House Pvt. Ltd. 2001, New Delhi.
  • Bhatt
  • Bhatt and Sharma S. R.: Educational Technology, Kanika Publishing House, New Delhi.
  • Chauhan, S. S.: Innovations in Teaching Learning Process, Vikash Publication, 1990, New Delhi.
  • Hornby, A.S. 1995. Oxford Advanced Learner Dictionary. New York: Oxford University Press
  • Hughes, R. (2002). Teaching and researching speaking. Edinburgh: Pearson Education.
  • Ravi, S. Samuel, A Comprehensive Study of Education, Fourth Printing-May 2016, Delhi – 110092, ISBN – 978-81-203-4182-1,
  • Effective Principles of Communication
  • Internet sources

প্রশ্ন – যোগাযোগের মূলনীতি কি কি?

উত্তর – যোগাযোগের মূল নীতিগুলি হল – যোগ্যতার নীতি, যোগাযোগের মাধ্যম নির্বাচনের নীতি, বিষয়বস্তু নির্বাচনের নীতি প্রভৃতি।

প্রশ্ন – যোগাযোগের মূলনীতি বলতে কী বোঝো?

উত্তর – যোগাযোগের মূলনীতি হল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে কার্যকরী করে গড়ে তোলা। অর্থাৎ দুজন ব্যক্তি বা তারও বেশি ব্যক্তিগণের মধ্যে তখনই যোগাযোগ সুসম্পন্ন হবে, যখন যোগাযোগের নীতিগুলিকে অনুসরণ করা হবে। যোগাযোগের মূল নীতিগুলির মধ্যে বিষয়বস্তুর নীতি, মাধ্যম নির্বাচনের নীতি, মিথস্ক্রিয় নীতি প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ।

আরোও পড়ুন

Rate this post

Mr. Debkumar – Author and Founder of Edutiips.com

Mr. Debkumar – Author and Founder of Edutiips.com

A dedicated educator with 10+ years of teaching experience, UGC NET Qualified, and holder of MA, B.Ed, and M.Phil in Education (University of Calcutta).

He has authored several books published by Aheli Publication, such as Communication Skills, Aspect of Democratic Citizenship, Sociological Foundation of Education, Computer Applications, Fundamentals of Education, Educational Organization and Planning, and Educational Research.

He is also an active contributor on Quora, where he shares expert insights on education, history, and social issues.

Leave a Comment

close