Share on WhatsApp Share on Telegram

শিক্ষা সমাজবিজ্ঞান কি | শিক্ষার সমাজবিজ্ঞানের প্রকৃতি | Definition of Sociology of Education

Join Our Channels

শিক্ষা সমাজবিজ্ঞান বিষয়টি শিক্ষা ও সমাজের মধ্যে সম্পর্কের বিষয় হিসেবে পরিগণিত হয়। শিক্ষা সমাজবিজ্ঞান (Sociology of Education) সমাজবিজ্ঞানের একটি উন্নততর শাখা, যেটি সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিয়া-কলাপের সঙ্গে সংযুক্ত হিসাবে কাজ করে।

শিক্ষা সমাজবিজ্ঞান সমাজ বিজ্ঞানের একটি বিশেষ শাখা। যেটি সমাজবিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ত্বগুলি শিক্ষার ক্ষেত্রে উপযুক্ত হওয়ার পথ নির্দেশ করে থাকে। অর্থাৎ শিক্ষাগত যাবতীয় সমস্যার সমাধানের জন্য শিক্ষা সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি হয়েছে।

শিক্ষা সমাজবিজ্ঞান কি | Sociology of Education

যে বিজ্ঞানে সমাজতাত্ত্বিক সমস্যার উপর বিশেষভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয় এবং সমাজতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াগুলির বিশ্লেষণ ঘটে শিক্ষা পরিবেশের মধ্যে তাকে, শিক্ষা সমাজবিজ্ঞান বলে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমাজতাত্ত্বিক প্রক্রিয়াগুলির বিশ্লেষণের মূল কেন্দ্রবিন্দু।

শিক্ষা সমাজবিজ্ঞান কি ? (What is Sociology of Education?) -এ সম্পর্কে বিভিন্ন সমাজতাত্ত্বিকদের দেওয়া বিভিন্ন সংজ্ঞা পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল –

1. সমাজতাত্ত্বিক Ivor Morris বলেছেন – শিক্ষা সমাজবিজ্ঞান সমাজতাত্ত্বিক সমস্যাগুলির ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করে।

2. বিশিষ্ট সমাজবিদ্‌ Angel -এর মতে, শিক্ষা সমাজবিজ্ঞান বিদ্যালয়ের পরিস্থিতির ক্ষেত্রে সম্পদ ভিত্তিক শৃঙ্খলা বা নিয়ম-নীতি বিকাশের ক্ষেত্র।

তাই শিক্ষা সমাজবিজ্ঞান হল শিক্ষার সমাজবিজ্ঞানের ক্ষেত্রগুলি অধ্যায়ন করা। অর্থাৎ শিক্ষা ব্যবস্থা এবং সমাজব্যবস্থার মধ্যে যে গভীর সম্পর্ক বর্তমান তা বুঝতে সহায়তা করা।

শিক্ষার সমাজবিজ্ঞানের প্রকৃতি

শিক্ষার সমাজবিজ্ঞানের মূল আলোচ্য বিষয় হল সমাজের বিভিন্ন উপাদান গুলির মধ্যে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষাকে প্রভাবিত করা বা শিক্ষাগত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা। শিক্ষার সমাজবিজ্ঞানের প্রকৃতি যে সমস্ত দিকে বিদ্যমান, সেগুলি হল নিম্নলিখিত –

1. বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি

শিক্ষাবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান এই দুই বিষয়ের মধ্যে সম্পর্ক ভিত্তিক দিকটি বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। তাই শিক্ষার সমাজবিজ্ঞান একটি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে শিক্ষা প্রক্রিয়াকে বিশেষভাবে আলোকপাত করে। অর্থাৎ সামাজিক প্রেক্ষাপটে শিক্ষা সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গঠন শিক্ষার সমাজবিজ্ঞানের বিশেষ দিক।

2. সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার প্রক্রিয়া

শিক্ষার সমাজবিজ্ঞান সামাজিক মিথস্ক্রিয়া মূলক প্রকৃতির। অর্থাৎ সামাজিক বিভিন্ন উপাদান গুলির মধ্যে পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার ফলে শিক্ষার সমাজবিজ্ঞানের শ্রীবৃদ্ধি ঘটে।

3. নির্দিষ্ট নিয়ম-শৃঙ্খলায় আবদ্ধ

শিক্ষার সমাজবিজ্ঞান একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে আবদ্ধ। অর্থাৎ শিক্ষার যেমন বিভিন্ন রীতিনীতি নিয়ম-কানুন বর্তমান অপরদিকে সমাজের নিয়ম-নীতি বা নিয়ম শৃঙ্খলা সুনির্দিষ্ট হয়ে থাকে। ফলে সমাজের যা কিছু ভালো দিকগুলি সেগুলি শিক্ষার মধ্য দিয়ে উন্নতি সাধন করা সম্ভব হয়।

4. তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক প্রকৃতির

শিক্ষার সমাজবিজ্ঞান কেবলমাত্র তত্ত্বমূলক দিকে সীমাবদ্ধ নয়। বরং এটি ব্যবহারিক প্রকৃতির হয়ে থাকে। ফলে শিক্ষার কার্যধারা আরো বৃদ্ধি পায়। সমাজ প্রগতির দিকে এগিয়ে যায়।

5. গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উন্নতিবিধান

শিক্ষার সমাজবিজ্ঞানের অন্যতম প্রকৃতি হল গণতান্ত্রিকতা। অর্থাৎ সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের শিক্ষার অধিকার প্রদান করা, যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা ও সমাজ উপযোগী করে গড়ে তোলার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের উন্নতিসাধন সম্ভব হয়।

6. প্রয়োগমূলক

শিক্ষার সমাজবিজ্ঞান প্রয়োগমূলক প্রকৃতির। তাই সমাজতাত্ত্বিক শিক্ষার প্রয়োগের ফলে শিক্ষাবিজ্ঞান তথা সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থাকে ব্যবহারিক করা সম্ভব হয় এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্য অভিমুখী করা সম্ভব হয়।

7. সমাজতান্ত্রিক মূলক

শিক্ষার সমাজবিজ্ঞান সম্পূর্ণরূপে সমাজতাত্ত্বিক প্রকৃতির। অর্থাৎ সমাজে যা কিছু ভালো, যা কিছু মঙ্গলময় সবই শিক্ষার সমাজবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়। তাই সমাজতাত্ত্বিক শিক্ষার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারা প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষার একটি সুনির্দিষ্ট মান গঠন করে যাতে ব্যক্তি তথা সমাজের কল্যাণ সাধন হয়।

তাই বলা যায়, শিক্ষার সমাজতত্ত্ব শিক্ষার উন্নতির সাথে সাথে সমাজের উন্নতি সাধন করা হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে সংস্কৃতির বা প্রাচীন ঐতিহ্যের সংরক্ষণ সঞ্চালন করা সম্ভবপর হয়। ফলে এখানে শিক্ষায় বিভিন্ন সংস্কৃতির ধারাকে গুরুত্ব প্রদান করা হয়ে থাকে।

আরোও পোস্ট পড়ুন – Click Here Now

উপসংহার (Conclusion)

পরিশেষে বলা যায়, সামাজিক গঠন কাঠামো, সামাজিক চাহিদা, সামাজিক মিথস্ক্রিয়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার লক্ষ্য, শিক্ষাদান পদ্ধতি, পাঠক্রম, শিক্ষার মাধ্যম প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি শিক্ষার সমাজবিজ্ঞানে বিশেষভাবে আলোকপাত করা হয়ে থাকে। তাই সমাজ গঠনের ক্ষেত্রে শিক্ষার সমাজবিজ্ঞান চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে থাকে।

প্রাথমিক গোষ্ঠীর ধারণা, সংজ্ঞা, বৈশিষ্ঠ্য ও শিক্ষাগত তাৎপর্যসামাজিক গোষ্ঠীর ধারণা, সংজ্ঞা ও শ্রেণীবিভাগ
শিশুর সামাজিকীকরণে পরিবারের ভূমিকাশিশুর সামাজিকীকরণে বিদ্যালয়ের ভূমিকা

তথ্যসূত্র (Reference)

  • Brown, F. J. (1954). Educational Sociology. New York: Prentice-Hall.
  • Bhattacharjee, Srinivas. (1996). Philosophical & Sociological Foundation of Education. Herald book service.
  • Das, P. (2007). Sociological Foundation of Education. New Delhi: Authorspress
  • Shukla, S & K Kumar. (1985). Sociological Perspective in Education. New Delhi, Chanakya
    Publications
  • Sodhi, T.S & Suri, Aruna. (1998). Philosophical & Sociological Foundations of Education, H.P Bhargav Book House, Agra,

প্রশ্ন – শিক্ষার সমাজবিজ্ঞান বলতে কি বোঝ

উত্তর – শিক্ষার সমাজবিজ্ঞান হল সমাজ বিজ্ঞানের একটি শাখা যেটি সমাজবিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ত্বগুলি শিক্ষার ক্ষেত্রে উপযুক্ত হওয়ার পথ নির্দেশ করে থাকে।

আরোও পড়ুন

4/5 - (5 votes)

Mr. Debkumar – Author and Founder of Edutiips.com

Mr. Debkumar – Author and Founder of Edutiips.com

A dedicated educator with 10+ years of teaching experience, UGC NET Qualified, and holder of MA, B.Ed, and M.Phil in Education (University of Calcutta).

He has authored several books published by Aheli Publication, such as Communication Skills, Aspect of Democratic Citizenship, Sociological Foundation of Education, Computer Applications, Fundamentals of Education, Educational Organization and Planning, and Educational Research.

He is also an active contributor on Quora, where he shares expert insights on education, history, and social issues.

Leave a Comment

close