১৯৮৬ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম এবং উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হল সর্বশিক্ষা অভিযান (Sarva Shiksha Abhiyan) কর্মসূচি।
স্বাধীনতার পর ভারতবর্ষে শিক্ষার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। তাছাড়া সংবিধানের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সংবিধান চালু হওয়ার ১০ বছরের মধ্যে প্রারম্ভিক শিক্ষা বা প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করা কথা বলা হয়। কিন্তু বিভিন্ন সমস্যার কারণে শিক্ষা সর্বজনীকরণ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীকালে শিক্ষাকে সার্বজনীন করার লক্ষ্যে সর্বশিক্ষা অভিযান কর্মসূচি গৃহীত হয়।
সর্বশিক্ষা অভিযান কি | Sarva Shiksha Abhiyan
সকলের জন্য শিক্ষা বা শিক্ষা সকলের অধিকার। সংবিধানের এই প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য বিভিন্ন কমিশন ও কমিটি বিভিন্ন সুপারিশ করেছেন।
পরবর্তীকালে ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের জন্য এবং সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য পূরণের জন্য সর্বশিক্ষা অভিযান (SSA) কর্মসূচি গৃহীত হয়।
সর্বশিক্ষা অভিযান হল ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ব্যবহার উপযোগী এবং মানসম্পন্ন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে সুনিশ্চিত করা। এটি একটি কর্ম প্রকল্প যেটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য ভিত্তিক এবং সময় ভিত্তিক।
সর্বশিক্ষা অভিযান লক্ষ্য
সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা বা প্রারম্ভিক শিক্ষার বিস্তার সাধনের ক্ষেত্রে সর্বশিক্ষা অভিযান লক্ষ্য যে সমস্ত দিক থেকে পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল –
i) ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সি সকল শিশুকে বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রদান করা।
ii) সমস্ত শিক্ষার্থীদের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা প্রদান করা।
iii) ২০০৪ সালের মধ্যে বিদ্যালয়ের ছুট ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনা।
iv) ২০০৭ সালের মধ্যে পাঁচ বছর ব্যাপী এবং ২০১০ সালের মধ্যে চার বছরব্যাপী ন্যূনতম আবশ্যিক শিক্ষা প্রদান করা।
v) প্রাথমিক শিক্ষার গুনগতমান বজায় রাখা,
vi) প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।
আরোও পোস্ট পড়ুন – Click Here Now
সর্বশিক্ষা অভিযান সীমাবদ্ধতা
সর্বশিক্ষা অভিযান কর্মসূচি একটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই কর্মসূচির কিছু সীমাবদ্ধতা পরিলক্ষিত হয়। সেগুলি হল নিম্নলিখিত –
i) বিদ্যালয়ে উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাব
ii) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকের অভাব
iii) প্রশাসনিক দুর্বলতা
iv) বিদ্যালয়ের ছুটের হার বেশি বা অপচয় ও অনুন্নয়নের হার বেশি।
v) জনগণের অংশগ্রহণ বা সদিচ্ছার অভাব প্রভৃতি ।
উপসংহার (Conclusion)
পরিশেষে বলা যায়, বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও সর্বশিক্ষা অভিযান শিক্ষক, সমাজকর্মী তথা সমাজের প্রতিটি নাগরিকের সংবিধানের প্রতিশ্রুতি পালন করতে সক্ষম হয়েছে। এবং এটির ফলে শিক্ষার্থীরা ন্যূনতম প্রাথমিক শিক্ষার মূল স্রোতে ফিরে আসতে পেরেছে।
তথ্যসূত্র (References)
- Aggarwal, J. C., Theory and Principles of Education. 13th Ed. Vikas Publishing House Pvt. Ltd.
- V.R. Taneja, Educational Thoughts & Practice. Sterling Publication Pvt. Ltd. New Delhi
- Nayak, B.K, Text Book of Foundation of Education. Cuttack, Odisha: KitabMhal
- Ravi, S. Samuel, A Comprehensive Study of Education, Fourth Printing-May 2016, Delhi – 110092, ISBN – 978-81-203-4182-1,
- Internet sources
প্রশ্ন – সর্বশিক্ষা অভিযান কার্যকরী হয় কত সালে
উত্তর – সর্বশিক্ষা অভিযান কার্যকরী হয় ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে।
আরোও পড়ুন
- শিক্ষার গণতান্ত্রিক লক্ষ্য বলতে কী বোঝো | Democratic Aim of Education
- মন্তেসরি শিক্ষা পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য | Characteristics of Montessori Education System
- শিক্ষায় মূল্যবোধের গুরুত্ব | Importance of Values in Education
- মন্তেসরি শিক্ষা পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধা | Montessori Education
- প্রকল্প পদ্ধতি কাকে বলে | এই পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য | Project Method
- কিন্ডারগার্টেন পদ্ধতি কি | কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য | 8 Characteristics of Kindergarten Method